শান্তিপুর থেকে গ্রেপ্তার নবান্নের ভুয়ো ডিএসপি

Share

স্নেহাশীষ মুখার্জিঃ নদীয়াঃ গতকাল পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নদীয়ার শান্তিপুরের বাগানে পাড়া এলাকা থেকে রাধারানী বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে।

প্রসঙ্গত, কৃষ্ণনগর কাঁঠালপোতার বাসিন্দা রাধারানী সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাকরী দেওয়ার নাম করে লক্ষাধিক টাকা নিয়েছিল। গত পরশু পুলিশ তার বাড়িতে গেলে রাধারানীকে না পেয়ে ওই ভুয়ো ডিএসপি অফিসার রাধারানীর গাড়ি চালকে গ্রেপ্তার করেছিল।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ভুয়ো নবান্নের ডিএসপি অফিসারের নাম রাধারানী বিশ্বাস। রাধারানীর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন যুবক-যুবতী নদীয়ার কোতোয়ালি থানায় চাকরী দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা নেওয়ার বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।


সৌরভ ব্যানার্জী নামের এক অভিযোগকারী বলেন, “ওই মহিলা বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কাজ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে কারোর কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা তো কারোর কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। আমরা চাই যারা যারা টাকা দিয়েছে তারা তাদের টাকা ফেরত পাক ও অভিযুক্তের শাস্তি হোক”।
শুধু চাকরীর নামে প্রতারণার অভিযোগ নয়, যেমন দেবাঞ্জন দেব ভুয়ো আইএএস অফিসার পরিচয় দিয়ে ঘুরতেন তেমনি এই রাধারানীও কখনো নিজেকে সিআইডি তো কখনো ডিএসপি অফিসার বলে পরিচয় দিতেন বলে অভিযোগ।


এখানেই শেষ নয়। যেরকম দেবাঞ্জনকে নেতা-মন্ত্রী-সাংসদদের পাশে পাশে দেখা যেত সেইরকম রাধারানীকেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নেতা-মন্ত্রীদের পাশে গলায় উত্তরীয় পরে দেখা গেছে।
এছাড়া ভুয়ো সিআইডি অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নেতা-মন্ত্রীদের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতেও দেখা যেত। কসবার ভুয়ো ভ্যাকসিনেশন কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের সঙ্গে এই ঘটনাপ্রবাহ অক্ষরে অক্ষরে মিলে গিয়েছে।

লকডাউনের সময়ে রাধারানী দুস্থদের ত্রাণ বিলির অনুষ্ঠানে নেতা-মন্ত্রীদের একেবারে মাঝে ছিলেন। যে ছবিতে দেখা গিয়েছে বাঁদিকে কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস এবং ডানদিকে নদীয়ার যুব তৃণমূল সভাপতি জয়ন্ত সাহা।
তৃণমূলের যুব নেতা একটি অনুষ্ঠানের ছবি নিজের ফেসবুকেও পোস্ট করেছিলেন। সেখানে রাধারানীকে দিদি সম্বোধন করে ধন্যবাদও জানিয়েছেন।

কিন্তু এই প্রসঙ্গে কারামন্ত্রী দাবী করেছেন যে, “তৃণমূলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের তরফ থেকে ত্রাণ বিলির অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে নিমন্ত্রিত ছিলেন। হাজার হাজার লোক এসেছিলেন। তাই কে কার সাথে ছবি তুলেছে তা জানা নেই”।

অন্য আরেকটি ছবিতে দেখা গিয়েছে যে, রাধারানীর ডানদিকে কৃষ্ণনগর টাউন তৃণমূলের সভাপতি শিবনাথ চৌধুরী রয়েছেন। তবে তৃণমূলের এই নেতা রাধারানীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলে দিয়েছেন, “আমরা এসব জানিও না কোথা থেকে টাকা নিয়েছেন? ২০২০ সালে তো প্রচুর লোককে খাইয়েছিলেন। তখন অভিযোগ তোলেননি কেন? টাকা যে নিয়েছে প্রমাণ দিন। প্রমাণ তো দিতে হবে। আমিও তো এফআইআর করতে পারি”।

অবশ্য উল্টো সুর শোনা যাচ্ছে দলেরই অন্য আরেক নেতার গলায়। কৃষ্ণনগর তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী জানিয়ে দিয়েছেন, “ওই মহিলা পুলিশের পোশাক পরে নিজেকে সিআইডি অফিসার পরিচয় দিয়ে এলাকায় ঘুরতেন৷ এর পাশাপাশি স্থানীয় যুবক-যুবতীদের প্রভাবিত করে চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন৷
যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রাধারানীর মেয়ে দাবী তুলে জানিয়ে দিচ্ছেন যে, “মাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে”।

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930