অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ গতকাল কলকাতার বাগুইআটির সাহাপাড়ার একটি নির্মীয়মাণ আবাসনে সুরক্ষা জাল না লাগিয়ে নির্মাণকার্য করতে গিয়ে চারতলা থেকে নীচে পড়ে গুরুতর আহত হলেন তিন জন শ্রমিক। এই ঘটনায় এক জনের একটি হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
জানা গিয়েছে, বিধাননগর পুর এলাকায় নির্মীয়মাণ ওই প্রকল্পে দু’টি টাওয়ার তৈরী হচ্ছে। সেখানে দিন দশেক আগে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা কলিমুদ্দিন, বাসিরুদ্দিন, নুর হোসেন ও আনসারুল শেখ সহ কয়েক জন কাজে যোগ দেন। কিন্তু বহুতলের পিছনের টাওয়ারের চারতলায় ভারা বেঁধে কাজ করার সময়েই তিন জন পড়ে যান।
প্রত্যেকেই গুরুতর আহত হয়েছেন। এরপর নির্মাণ সংস্থার লোকজনই তাদের আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। এই ঘটনায় নুরের হাত আলাদা হয়ে যায়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, নুরের হাত জোড়া লাগানোর জন্য অস্ত্রোপচারের চেষ্টা করা হলেও সেটি আদৌ জোড়া লাগবে কি না তা নিয়ে চিকিৎসকেরাও সন্দিহান।
এই ঘটনায় ঠিকাদার সংস্থা বহুতলের গায়ে জাল লাগায়নি কেন? তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আবার এলাকাবাসীদের অভিযোগ, ‘‘ওই নির্মাণস্থলে সব সময়ে জাল লাগানো হয় না।’’
নির্মাণ সংস্থার মালিক সুরজিৎ সাহার জানান, ‘‘ঠিকাদারের কাছে জাল, নিরাপত্তা-বেষ্টনী ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার সব সামগ্রী দেওয়ার পরও জাল লাগানো হয়নি কেন সেটা আমারও প্রশ্ন। কিন্তু ঠিকাদারের ফোন বন্ধ। এছাড়া আহত তিন জনকে সুস্থ করে তুলতে যা প্রয়োজনীয় সব করা হচ্ছে।’’
তবে স্থানীয় ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা দু’নম্বর বরোর চেয়ারম্যান প্রণয় রায় বলেন, ‘‘কার গাফিলতি দেখতে পুরসভাকে লিখিত আবেদন জানাব। বহুতলটি পাঁচ বছর ধরে হচ্ছে। সেখানে গিয়ে প্রোমোটার বা ঠিকাদারের সন্ধান পাওয়া যায়নি।’’
এই ধরণের কোনো দুর্ঘটনা এড়াতে কলকাতা পুরসভা শ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তা-বেষ্টনী, নির্মাণস্থল জাল দিয়ে ঘিরে রাখা এবং শ্রমিকদের বিষয়ে থানায় যাবতীয় তথ্য প্রদান-সহ একাধিক বিষয় বাধ্যতামূলক করেছে।
বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ঠিকাদার ও প্রোমোটারদের শ্রমিকদের জীবন নিয়ে খেলার অধিকার নেই। পুরসভা ওখানে প্রতিনিধি পাঠাবে। পুলিশের সাথেও কথা বলা হবে।’’