ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ইতিমধ্যে মারা গিয়েছে ৯ জন

Share

ব্যুরো নিউজঃ বাংলাদেশঃ আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী গতকাল রাতেরবেলা ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং বাংলাদেশের উপকূলে আছড়ে পড়ে। সিত্রাংয়ের প্রভাবে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইছিল। এই অবধি ঝড়ের তাণ্ডবে ৯ জন মারা গিয়েছেন। এর মধ্যে ভোলায় ২ জন, কুমিল্লায় ৩ জন, নড়াইলে ১ জন, বরগুনায় ১ জন ও সিরাজগঞ্জে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ গতকাল সন্ধ্যাবেলা এবং মূল কেন্দ্রটি রাতেরবেলা উপকূলে আঘাত করে মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রটি ভোলার উপর দিয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের দড়িকান্দি এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বড়ো একটি গাছ উপড়ে পড়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।


এদিকে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের বেশীরভাগ এলাকায় ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। উপকূলের ১৫ টি জেলার নদ–নদীর জলস্তর স্বাভাবিকের থেকে ৩ থেকে ৫ ফুট বেশী। ভোলার দৌলতখানা পুর এলাকায় খাদিজা বিবি নামে এক জন বৃদ্ধা গাছ চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন। আর ভোলাতেই চারফ্যাশন উপজেলায় দু’জন বাইকে করে যাওয়ার সময় তাদের উপর একটি গাছ ভেঙে পড়ায় ঘটনাস্থলেই বাইক চালকের মৃত্যু হয়।


আরোহী গুরুতর আহত হওয়ায় স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের হেসাখাল ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়ায় ঘরের উপর গাছ উপড়ে চার বছর বয়সী কন্যা নুসরত সহ স্বামী নিজামউদ্দিন এবং স্ত্রী শারমিন আক্তারের মৃত্যু হয়েছে। নড়াইলে মর্জিনা বেগম নামে এক জনের মাথার উপর গাছের ডাল ভেঙে পড়ায় স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।


বরগুনায় একটি বাড়ির উপর গাছ ভেঙে পড়ে ঘরে থাকা আমিনা খাতুন নামে এক জন বৃদ্ধার ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। আর সিরাজগঞ্জ সদরের সয়দা ইউনিয়নের মোহনপুর এলাকায় নৌকাডুবিতে মা-ছেলের মৃত্যু হয়। এই ঘূ্র্ণিঝড় বাংলাদেশের ১৩ টি জেলায় প্রভাব ফেলেছে। উপকূলবর্তী এলাকার বহু বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকা অন্যান্য জায়গা থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। গতকাল বিকেলবেলা থেকে চট্টগ্রাম, বরিশাল ও কক্সবাজার বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেরি-নৌকো চলাচল বন্ধ রাখা হয়। বেশীর ভাগ বাস নির্ধারিত সময়ে দক্ষিণের গন্তব্যে রওনা হতে পারেনি। সেই সাথে উপকূলের বেশীর ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় উপকূলীয় এলাকা জুড়ে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বরিশাল, চট্টগ্রাম উপকূল-সহ সারা দেশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যাবেলা ছ’টা পর্যন্ত পটুয়াখালির খেপুপাড়ায় ২৯৪ মিলিমিটার, বরিশালে ২৬১ মিলিমিটার, পটুয়াখালিতে ২৫৩ মিলিমিটার, মোংলায় ২১৯ মিলিমিটার, খুলনায় ১৮৭ মিলিমিটার এবং ঢাকায় ১২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, ফেনী, ভোলা, খুলনা, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, ঝালকাঠি, লক্ষ্মীপুর, বরগুনা, বরিশাল, নোয়াখালি, সাতক্ষীরা, কক্সবাজার, পটুয়াখালি, পিরোজপুর এবং বাগেরহাটে সব চেয়ে বেশী ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
May 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031