নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বীরভূমঃ গতকাল বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের লোকপুর থানার অন্তর্গত ভাদুলিয়া গ্রামে গঙ্গারামচক মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেড কোলিয়ারিতে (জিএমপিএল) বিস্ফোরণের জেরে মুখ্যমন্ত্রী মৃতদের পরিবার পিছু ত্রিশ লক্ষ ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলেন। এছাড়া পরিবারের এক জনকে চাকরীর প্রতিশ্রুতি দিলেন।
জানা গেছে, কয়লাখনিতে বিস্ফোরণের ফলে এখনো অবধি ৬ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আর আহতদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক। মৃত শ্রমিকরা হলেন জুডু মারান্ডি, মঙ্গল মারান্ডি, জয়দেব মুর্মু, রুবিলাল মুর্মু, পলাশ হেমব্রম ও সোমলাল হেমব্রম। সকলের বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে৷ বিস্ফোরণের অভিঘাতে জুডু, মঙ্গল, জয়দেব, রুবিলাল, পলাশ এবং সোমলালের দেহ একেবারে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। আর দেহাংশ এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে।
এদিকে, এই ঘটনার পরেই জিএমপিএলের আধিকারিক সহ উপরতলার কর্মীরা এলাকা ছেড়ে পালান। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। আহতদের মধ্যে ইতিমধ্যে এক জনের অবিলম্বে অস্ত্রোপচারও করতে হবে বলে জানা গিয়েছে। এদিন মুখ্যসচীব মনোজ পন্থ সাংবাদিক বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি ঘোষণা করেন যে, এই দুর্ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৃতদের পরিবার পিছু এক জনকে হোমগার্ডের চাকরী দেওয়ার পাশাপাশি মৃতদের পরিবারকে মোট ত্রিশ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণও দেবে বলে ঘোষণা করলেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়লাখনিতে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য একটি ট্রাকে করে বিস্ফোরক আনা হয়েছিল। অন্য দিন যে পরিমাণ বিস্ফোরক দু’টি ট্রাকে আনা হয়, গতকাল তা একটি ট্রাকে করেই নিয়ে আসা হয়েছিল। তাই ওভারলোডিংয়ের জেরেই এই বিস্ফোরণ ঘটেছে কি না, প্রশ্ন উঠেছে। ইতিমধ্যে ফরেন্সিক দল নমুনাও সংগ্রহ করেছে। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর এলাকা উত্তপ্ত ছিল।
অন্যদিকে, বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা জানান, ‘‘সঠিক পরিকাঠামো ছাড়াই ওই খনি থেকে কয়লা উত্তোলন হত৷ যা ঘটেছে, তা খুবই মর্মান্তিক। বিস্ফোরণে এতগুলো প্রাণ গেল। প্রশাসনের মদতে এই কয়লা খনি চলে। জঙ্গল কেটে খনি করা হয়, অনুমোদন ছা়ড়াই গভীর খনন করা হয়৷ আর বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি খোলা রাস্তা দিয়ে আসছে? আজ যদি এই বিস্ফোরণ জনবহুল এলাকায় ঘটত কী হত? প্রশাসন এ ভাবে দায়িত্ব এড়াতে পারে না৷ আমরা চাই এনআইএ তদন্ত হোক। তা হলেই সত্য সামনে আসবে।’’