দুর্নীতিকে ঘিরে মোদি-মমতাকে একই তীরে বিঁধলেন অধীর
দীপঙ্কর গোস্বামীঃ মালদাঃ “মোদি এক নাটকবাজ, দিদি আরেক নাটকবাজ। দু’জনকেই সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিয়ে প্রকাশ্য নির্বাচনী জনসভায় এভাবেই বিঁধলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
অধীর চৌধুরী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি চলছে। মুসলিম ভোট ও হিন্দু ভোটবাক্সের কথা ভেবে মোদি-দিদি দুজনেই নাটক করছেন। কেউ মুসলিমদের খাতির করছেন তো কেউ হিন্দুদের খাতির করছেন। এর জেরে এই রাজ্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষে বিভেদ তৈরি হচ্ছে। এছাড়া দিদি হাত ধরে এই রাজ্যে বিজেপিকে নিয়ে এসেছে, এমন অভিযোগও তুলেছেন তিনি। যতদিন কংগ্রেস কেন্দ্রের ক্ষমতায় ছিল ততদিন দেশে বা এই রাজ্যে কোনো সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ ছিল না বলেও দাবী করেন অধীর চৌধুরী”।
মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের খন্তা মাঠে সংযুক্ত মোর্চার কংগ্রেস প্রার্থী মোস্তাক আলমের সমর্থনে জনসভার আয়োজন করা হয়। সেখানে অধীর চৌধুরী ছাড়াও সিপিএম ও কংগ্রেস নেতারা হাজির ছিলেন। জনসভায় ভিড় দেখে খুশি হয়ে অধীর চৌধুরী বলেছেন, “এই গরমে এতো মানুষের ভিড় দেখে আমাদের আশা-প্রত্যাশার পারদ বাড়ছে। এরপরেই আগাগোড়া মোদি ও দিদিকে নিশানা করেন। দু’জনকেই নাটকবাজ বলে কটাক্ষ করার পাশাপাশি এ দেশে মুসলিমদের অবদান কতটা তাও তুলে ধরেন”।
অধীর চৌধুরী জানালেন, “৬৫ সালে পাকিস্তান পাঞ্জাবের খেমকরণ সেক্টরে হানা দিয়েছিল। ভারতীয় সেনা আব্দুল হামিদ কিভাবে বীরত্বের সঙ্গে রুখে দিয়ে গুলিতে প্রাণ দিয়েছিলেন তা তুলে ধরেন”। এছাড়া প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম, এ আর রেহমানের দেশের জন্য অবদানের কথা তুলে ধরে অধীর চৌধুরী জানিয়েছেন, “যুগ যুগ ধরে আমরা একসঙ্গে বসবাস করছি। কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু মোদি-দিদি ভোটের সংকীর্ণ স্বার্থে, নির্বাচনে ভোট পাওয়ার হাতিয়ার হিসেবে সেই সাম্প্রদায়িকতার বাতাবরণ তৈরি করেছেন। সংযুক্ত মোর্চা ক্ষমতায় আসলে সাম্প্রদায়িকতার বিষ উপড়ে ফেলা হবে”।
এমনকি জনসভায় মুসলিমদের মন পেতে অধীর চৌধুরী বলে দিয়েছেন, “ইমামদের যে ভাতা দেওয়া হচ্ছে তা ওয়াকফ বোর্ডের আয় থেকে দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূল মাছের তেলে মাছ ভাজছে। আগে ওয়াকফ থেকে কয়েকশো কোটি টাকা আয় হত। এখন তা কয়েক হাজারে দাঁড়িয়েছে। সেই টাকাও লুঠ হচ্ছে”।
তৃণমূলেকে কটাক্ষ করে অধীর চৌধুরী স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, “আমরা গরু, বালি এবং কয়লা চুরি করি না। তাই কাউকে ভয় পাই না। শীতলকুচির সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে আদালতে গিয়ে সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত চাইব”।