নিজস্ব সংবাদদাতাঃ উত্তরাখণ্ডঃ গতকাল উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় হঠাৎ যোশীমঠের কাছে নন্দাদেবী হিমবাহ ফেটে পাহাড়ের বুকে অলকানন্দা ও ধৌলিগঙ্গা নদীর জলস্তর বেড়ে হড়পা বান ধেয়ে আসে। যার জেরে তপোবন জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া চামোলির রেনি গ্রামে ঋষিগঙ্গা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাঁধ ভাঙা জল নদীর দু’পাশের একের পর এক ঘর-বাড়ি ভেঙে তীব্র গতিতে এগোচ্ছে। তুষার ধসের জেরে চামোলি থেকে ঋষিকেশের রাস্তাও বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি প্রবল বৃষ্টিতে ধস নেমে গঙ্গোত্রী জাতীয় সড়কও বন্ধ রয়েছে। এই ভয়ংকর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অসংখ্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
Sponsored Ads
Display Your Ads Hereঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ভারত-তিব্বত সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ২০০ জনের উদ্ধারকারী দল উপস্থিত হয়। এনডিআরএফের উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে উদ্ধার কাজে উত্তরাখণ্ডের রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও অংশ নিয়েছে।
সেনাদের পক্ষ থেকে শ্রীনগর এবং ঋষিকেশ লাগোয়া বাঁধের বসতি এলাকাও খালি করার নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Hereএই ধসে নদীতে পড়ে প্রায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আপাতত ১৪৫ জন নিখোঁজ হয়েছেন।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর জানান, “নদীর দিকে যেন গর্জন করে নেমে আসছে বরফধসের পর বালি, পাথর এবং জলের একটা দেওয়াল”।
Sponsored Ads
Display Your Ads Hereধৌলিগঙ্গা নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় বহু গ্রাম পুরোপুরি তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। এরফলে পশ্চিম হিমালয়ের কয়েকটি এলাকা বন্যা ও ভূমিধসের সম্ভাবনা আছে। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যসচিব ওম প্রকাশ জানান, “এই ঘটনায় ১৫০ জন মানুষের মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে”।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিভেন্দ্র সিং রাওয়াত বলেন, “প্রবল বৃষ্টি এবং প্লাবনের জেরে অলকানন্দায় নীচু এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের এলাকা থেকে সরানো হয়েছে”।
এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, “উত্তরাখণ্ডের মানুষের জন্য বাংলা প্রার্থনা করছে, দেশ প্রার্থনা করছে”।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ টুইটারের মাধ্যমে জানিয়েছেন, “আমি উত্তরাখণ্ডের দুর্যোগ সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী ত্রিভেন্দ্র সিং রাওয়াত এবং অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। মানুষকে বাঁচানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তারা যুদ্ধকালীন তত্পরতায় কাজ করছেন। এনডিআরএফ দলগুলি উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। দেবভূমিকে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করা হবে”।
উত্তরখন্ডের এই ঘটনায় রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়েছেন, “উত্তরাখন্ডে পশ্চিমবঙ্গ থেকে কোনো পর্যটক বা কোনো কর্মরত ব্যক্তি আটকে রয়েছেন কিনা তা কলকাতা অফিস থেকে ডিটেল চেয়ে পাঠিয়েছেন। যদি সেখানে কেউ আটকে গিয়ে থাকে তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে শীঘ্রই তাদের ফিরিয়ে আনা হবে”।