প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে মৌমাছির আক্রমণে চরম পরিণতি হলো বৃদ্ধের

Share

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ পুরুলিয়াঃ প্রতিদিনের মতো পুরুলিয়ার কাশীপুর সিমলা গ্রামের এক বৃদ্ধ প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন। হঠাৎ ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি উড়ে আসতেই দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেও পারলেন না। ফলে মৌমাছির আক্রমণে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম শীতল মিশ্র। বয়স ৬৮ বছর। মৌমাছির কামড়ে মৃত্যু ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। গ্রামের বাসিন্দারা রাস্তার ধারে থাকা মৌচাকগুলি ভেঙে দেন।

রাজস্ব দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ছিলেন শীতল মিশ্র। সিমলা গ্রাম থেকে সিমলা জোড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা প্রতিদিন সকালে হাঁটতেন তিনি। এদিনও হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাস্তার পাশেই বাঁশ ঝোপে একটি পলাশ গাছে বহুদিন ধরে একটা বড় মৌচাক রয়েছে। এদিন ওই মৌচাক থেকেই ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছিরা শীতল মিশ্রকে আক্রমণ করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, পাখিরা মৌচাকে ঠোকর মারায় ক্ষিপ্ত হয়েই মৌমাছিরা ওই বৃদ্ধকে আক্রমণ করে। ছুটে পালানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন শীতলবাবু। প্রায় ৫০মিটার দূরে গিয়ে পড়ে যান। সেখানেও আক্রমণ করে মৌমাছির দল। স্থানীয় বাসিন্দারা দেখতে পেয়ে দ্রুত একটি গাড়ির ব্যবস্থা করে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শোকে ভেঙে পড়েছে শীতলবাবুর পরিবার। এদিকে, মৌমাছির আক্রমণে মৃত্যুর ঘটনার পর গ্রামের আশপাশে যত মৌচাক রয়েছে, সেই সব মৌচাক নষ্ট করে দেয় গ্রামবাসীরা।


মৌমাছির আক্রমণে মৃত্যু নিয়ে দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক নয়ন মুখোপাধ্যায় বলেন, “ একটা-দুটো মৌমাছি কামড়ালে বিপদের কিছু নেই। তবে একসঙ্গে অনেক মৌমাছি হুল ফোটালে মৃত্যু হতে পারে। কারণ, মৌমাছির হুলে শরীরে বিষ ঢোকে, যা রক্তনালী ও কণিকাকে ফুলিয়ে তোলে। গোটা শরীর ফুলে যায়। যার ফলে এই অবস্থায় রক্তচাপ কমে যায় এবং আক্রান্ত ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যায়। অতিরিক্ত রক্তাচাপ কমে যাওয়ার ফলে মৃত্যু ঘটতে পারে। তাছাড়াও শ্বাসনালী ফুলে যায়, ফলে শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়েও মৃত্যু ঘটতে পারে। দ্রুত চিকিৎসা না পেলে শ্বাস বন্ধ হয়ে মৃত্যু হতে পারে।”

এদিকে, দুর্গাপুরেও মৌমাছির কামড়ে এক প্রবীণ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম নির্মল দত্ত (৬২)। তাঁর বাড়ি দুর্গাপুরের ধান্ডাবাগের সুকান্তপল্লিতে। তাঁর শরীর থেকে ৮৯০টি মৌমাছিল হুল পাওয়া গিয়েছে। গত ১০ নভেম্বর ছেলে নভনীল দত্তকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় দুর্গাপুরের এ জোনের অরবিন্দ অ্যাভিনিউয়ের সামনে এক ব্যক্তিকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেছিলেন নির্মলবাবু। তা দেখে বাইক দাঁড় করান। সেইসময় ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি তাঁদের আক্রমণ করে। পেশায় চিকিৎসক নভনীল তাঁর বাবাকে মৌমাছির আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পথচলতি মানুষের সাহায্য চান। সাহায্য চান দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার আধিকারিকদের আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীদের কাছেও। অভিযোগ, কোনও সহযোগিতা না পেয়ে প্রায় ৮০০ মিটার দূরে দুর্গাপুর থানায় দৌড়ে যান। পরে পুলিশের সাহায্যে নির্মলবাবুকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে হাসপাতালেই মৃত্যু হয়।


Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930