মায়ানমারের পাশাপাশি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলো ব্যাঙ্ককও

Share

ব্যুরো নিউজঃ মায়ানমারঃ জোড়া ভূমিকম্পে মায়ানমারের বিস্তীর্ণ এলাকা তছনছ হয়ে গিয়েছে। প্রতিবেশী তাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককেরও কিছু অংশ একেবারে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ব্যাঙ্ককে বহু মানুষ ভূমিকম্পের সময়ে বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। সেখানকার সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের সামনে বহু মানুষ জড়ো হয়েছেন। মায়ানমারের সামরিক জুন্টা সরকার দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় জরুরী অবস্থা জারি করেছে।

আবার ভূমিকম্প-পরবর্তী পরিস্থিতিতে মায়ানমারের জাতীয় বিমান সংস্থা বেশ কিছু উড়ান বাতিল করেছে। মায়ানমারের মোট পাঁচটি শহরে ভূমিকম্পের জেরে বহুতল ধসে পড়েছে। দু’টি সেতু ভেঙে গেছে। একটি জাতীয় সড়ক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মায়ানমারের মান্দালয় শহরে ভূমিকম্পের প্রভাব সবচেয়ে বেশী। একটি আস্ত মসজিদ ভেঙে পড়েছে। মসজিদের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে প্রায় কুড়ি জনের মৃত্যু হয়েছে।জুন্টার তরফে টেলিগ্রামে জানানো হয়েছে, ‘‘মায়ানমারের ছ’টি রাজ্য ও প্রদেশে জরুরী অবস্থা জারি করা হচ্ছে। গৃহযুদ্ধের কারণে অনেক এলাকায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।


যে যে এলাকা বিদ্রোহীদের দখলে, সেখানে ভূমিকম্পের ক্ষয়-ক্ষতি কেমন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। আর সেই এলাকাগুলিতে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া যাবে কিনা, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।’’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জোড়া ভূমিকম্পের পর মায়ানমার ও তাইল্যান্ডের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘‘মায়ানমার এবং তাইল্যান্ডে সকলের সুরক্ষা সকলের সুরক্ষার জন্য প্রার্থনা করছি। আমি ওখানকার পরিস্থিতি দেখে উদ্বিগ্ন। ভারত সাধ্যমতো সমস্ত সাহায্য করতে প্রস্তুত। আমাদের কর্তৃপক্ষকে তৈরী থাকতে বলেছি। বিদেশ মন্ত্রককে মায়ানমার ও তাইল্যান্ডের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলেছি।’’


ভূমিকম্পের উৎসস্থল থেকে ব্যাঙ্ককের দূরত্ব অন্তত ৯০০ কিলোমিটার। তবু সেখানেও জোরালো কম্পন অনুভূত হয়। ব্যাঙ্কককে ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ এলাকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তিন জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে ব্যাঙ্কক প্রশাসন। জরুরি সফর বাতিল করে তাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বসেছেন। শহরে ট্রেন এবং মেট্রো পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ভূমিকম্পের ফলে ব্যাঙ্ককে ভেঙে পড়ে একটি নির্মীয়মাণ গগনচুম্বী বহুতল। সেই ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে তিন জন মারা গিয়েছেন। এখনও অনেকের খোঁজ পাওয়া যায়নি। উপপ্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপে ৮১ জনের চাপা পড়ে থাকার সম্ভাবনা। উদ্ধারকাজ চলছে।


আমেরিকার জিয়োলজিক্যাল সার্ভের তথ্য অনুযায়ী, কম্পনের মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৭.৭ এবং ৬.৪। আবার ভারতের ভূকম্প পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি জানিয়েছে, প্রথম কম্পনের মাত্রা ৭.৫ এবং দ্বিতীয়টির মাত্রা ৭। প্রথমটির উৎসস্থল মায়ানমারের বর্মা এলাকার ১২ কিলোমিটার পূর্বে। আর দ্বিতীয়টির উৎস মায়ানমারের লকসকের ১৫১ কিলোমিটার পশ্চিমে। দু’টি কম্পনের ক্ষেত্রেই উৎপত্তিস্থল ছিল মাটির ১০ কিলোমিটার নীচে। ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়েছে। কেঁপেছে বাংলাদেশ। কলকাতায় কোথাও কোথাও মৃদু কম্পন টের পাওয়া গিয়েছে। ভারতে কম্পন অনুভূত হয়েছে দিল্লি পর্যন্ত। এমনকি, চিনের কিছু এলাকাতেও ভূমিকম্প টের পাওয়া গিয়েছে।

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
September 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930