অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতের আবহেই এবার ডিভিসি (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন) পাঞ্চেত ও মাইথন জলাধার থেকে আবার জল ছাড়লো। গতকাল ডিভিসির তরফে জানানো হয়েছে, পাঞ্চেত থেকে বারো হাজার কিউসেক জল এবং মাইথন জলাধার থেকে ত্রিশ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে। আর গতকাল সকালে দুই জলাধার থেকে কুড়ি হাজার কিউসেক ও ত্রিশ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। তবে ঝাড়খণ্ডে নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় ডিভিসি ধাপে ধাপে জল ছাড়ার পরিমাণ কমাচ্ছে।
গতকাল রাতেরবেলা পাঞ্চেত এবং মাইথন জলাধার থেকে আসা ৪২ হাজার কিউসেক জল দুর্গাপুর জলাধারে পৌঁছেছে। দুর্গাপুর জলাধার থেকে ৪৯ হাজার ৫০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। এই জল দামোদর নদী অববাহিকা ধরে পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া ও হুগলীতে পৌঁছবে। বন্যা পরিস্থিতির জেরে এখনো হাওড়া, হুগলী, পূর্ব বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, বীরভূমের বহু গ্রাম জলের তলায়। এই পরিস্থিতিতে ডিভিসির ছাড়া জল নীচু এলাকাগুলিকে নতুন করে প্লাবিত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঞ্চেত এবং মাইথন জলাধার থেকে জল ছাড়া নিয়ে ডিভিসির ভূমিকায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। শনিবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই বিষয়ে দ্বিতীয় চিঠি লিখে জানিয়েছেন, “তিনি কেন্দ্রের আচরণের প্রতিবাদে দামোদর ভ্যালি জলাধার নিয়ন্ত্রণ কমিটি (ডিভিআরআরসি) থেকে রাজ্যের প্রতিনিধি প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন।” এরপর গতকাল রাজ্যের বিদ্যুৎ দপ্তরের সচীব শান্তনু বসু ডিভিসি বোর্ড থেকে সরে যান। আর রাজ্যের প্রতিনিধি তথা সেচ দফতরের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার উত্তম রায় ডিভিআরআরসি থেকে ইস্তফা দেন।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে তৈরী হওয়া নিম্নচাপের কারণে পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হয়েছিল। ফলে পাঞ্চেত এবং মাইথন জলাধারে জল বেড়ে যায়। আর ডিভিসি জল ছাড়ার পরেই হাওড়া, হুগলী, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়।