অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ বুধবার উচ্চ মাধ্যমিক শেষ হওয়ার পরে বিলাল ও ইসরাফেল কয়েক জন সহপাঠীর সঙ্গে বাবুঘাটের গঙ্গায় স্নান করতে নেমেছিল। জোয়ারের টানে বাকিরা উঠে আসতে পারলেও বিলাল এবং ইসরাফেল তলিয়ে যায়। এরপর একদিন কেটে গেলেও ওই দুই যুবকের খোঁজ মেলেনি।
এদিন সকালবেলা থেকে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী দফায় দফায় গঙ্গায় তল্লাশি চালায়। ডুবুরি ও স্পিডবোট নামিয়েও তল্লাশি চালালেও বিলাল এবং ইসরাফেলের সন্ধান পাওয়া যায়নি। আপাতত গঙ্গায় রিভার ট্র্যাফিক পুলিশ ও উত্তর বন্দর থানা নজরদারি চালালেও গঙ্গার তীরবর্তী থানাগুলিকে ঘটনার কথা জানানো হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বিলাল এবং ইসরাফেল কেউই সাঁতার জানত না। তা সত্ত্বেও গঙ্গায় নামার কারণ সম্পর্কে ধোঁয়াশা তৈরী হয়েছে। এদিন তপসিয়ার নয়াবস্তির বাড়িতে বসে ইসরাফেলের দাদা আসিফ বললেন, ‘‘গতকাল শেষ পরীক্ষা ছিল। তাই হয়তো বন্ধুদের সাথে বাবুঘাটে ঘুরতে গিয়েছিল। তবে সাঁতার না জেনেও জলে নামল কেন?
ভাইয়ের শখ বলতে ছিল বাইক আর পড়াশোনা। পাড়ায় তেমন বন্ধুও ছিল না। আমি চাকরী পাওয়ার পরে বলেছিল কয়েক বছর পরে একটা স্পোর্টস বাইক কিনে দিতে। কিন্তু ভাই-ই তো থাকল না!’’
এদিকে তপসিয়া সেকেন্ড লেনে বিলালের বাড়ির ঘর তালাবন্ধ। প্রতিবেশী সূত্রে জানা যায়, ‘‘ওর মা-বাবা বিহারে গিয়েছিলেন। এখানে শুধু দিদি আছে। তিনি একবার থানায় ও একবার বাবুঘাট দৌড়ে বেড়াচ্ছেন।’’ তবে এই খবর পেয়ে বিলালের মা-বাবা বিহার থেকে চলে এসেছেন।
বিলালের বাবা মহম্মদ নান্নে বললেন, ‘‘ইদের পরেই ছেলের বিহারে যাওয়ার কথা ছিল। আমরা ওখানে অনুষ্ঠান থাকায় আগে চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু এমন হবে জানলে আমি কিছুতেই ওকে ফেলে যেতাম না। এখন কী হবে?’’ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।