নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ঝাড়খণ্ডঃ প্রতিদিনের মতোই গতকাল ভোর ৫ টা নাগাদ ধানবাদের জেলা আদালতের অতিরিক্ত বিচারক উত্তম আনন্দ বাড়ি থেকে আধ কিলোমিটার দূরে জগিংয়ে বেরিয়েছিলেন। তখনই উত্তম আনন্দকে একটি অটো রিকশা পিছন থেকে দ্রুত গতিতে এসে পিষে দিলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। বিচারকের এ হেন মৃত্যু নিয়ে হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিমকোর্ট পর্যন্ত তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। পুরো ঘটনাটি সিসিটিভি ফুটেজও পাওয়া গেছে। যা দেখে শরীর শিউরে ওঠে।
সূত্রের ভিত্তিতে জানা যায়, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে স্পষ্টতই বোঝা যায় যে উত্তম আনন্দকে খুন করার লক্ষ্যেই গাড়ি নিয়ে পিছন থেকে ধাক্কা দিয়ে মেরে ফেলা হয়। উত্তম আনন্দ রাস্তার ধারে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন। স্থানীয় পথচলতি এক ব্যক্তি দেখতে পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে উত্তম আনন্দ বাড়ি ফিরছেন না দেখে সকাল সাড়ে ৭ টা নাগাদ পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানালে জানা যায়, পথ দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তি আসলে জেলা আদালতের অতিরিক্ত বিচারক উত্তম আনন্দ। এই ঘটনা নিয়ে আজ সুপ্রিমকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়।
ধানবাদ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ওই অটো রিকশার চালক ও তার সহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, সম্প্রতি উত্তম আনন্দ একটি মামলায় দুই গ্যাংস্টারের জামিন নাকচ করে দিয়েছিলেন। তাই সমাজবিরোধীরা প্রতিশোধ নিতেই এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।
দেশের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা বলেন, “আমরা এই মামলা শুনেছি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব। ইতিমধ্যে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সাথে কথা বলা হয়ে গেছে। গোটা বিষয়টি সুপ্রিমকোর্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। ঝাড়খণ্ড পুলিশও এই ঘটনায় মামলা রুজু করেছে”।
সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন এক বেঞ্চের সামনে ঘটনাটি তুলে ধরে আইনজীবী বিকাশ সিং একে ‘বিচার বিভাগের উপর নির্লজ্জ আক্রমণ’ বলে বর্ণনা করে ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন। কারণ এই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় পুলিশেরও যোগ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।