নিজস্ব সংবাদদাতাঃ দক্ষিণ দিনাজপুরঃ সন্তান প্রসবের চারদিন পর নার্সিংহোমের দু’তলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিলেন এক প্রসূতি। বিষয়টি নজরে আসতেই সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে চিকিৎসার জন্য আনা হয় গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের একটি নার্সিংহোমে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠাচ্ছে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ। মৃত প্রসূতি আত্মহত্যা করেছেন, না মৃত্যুর পেছনে অন্য কারণ রয়েছে, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।
মৃত প্রসূতির নাম মামণি মহন্ত দে(২৮)। বাড়ি গঙ্গারামপুর পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণপল্লি এলাকায়। গত রবিবার প্রসব যন্ত্রণার কারণে তাঁকে গঙ্গারামপুরের ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পরদিন অর্থাৎ সোমবার তিনি এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। অভিযোগ, সন্তানের জন্মের পর থেকেই অসুস্থ বোধ করছিলেন মামণি। পরিবার বারবার নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে জানালেও নাকি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দেখানো হয়নি। বরং মাঝেমধ্যে ওষুধ দিয়ে এড়িয়ে গিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার সকালে নার্সিংহোম থেকে ঝাঁপ দেন ওই প্রসূতি। আওয়াজ পেয়ে ছুটে যান স্থানীয় বাসিন্দা ও নার্সিংহোমের কর্মীরা। গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় মামণিকে। ঘটনার পর চাঞ্চল্য ছড়ায় গঙ্গারামপুরে নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে মামণির স্বামী বলরাম দে বলেন, “সন্তান প্রসবের পর ২ দিন ভালই ছিল আমার স্ত্রী। তারপর কেমন যেন হয়ে যায়। কাউকে চিনতে পারছিল না। ডাক্তারদের বলতে তাঁরা বলেন, তোমাদের চিন্তা করতে হবে না। তারপরই আজ এই ঘটনা ঘটল।”
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
মৃত প্রসূতির মা মীনু মহন্ত বলেন, “মেয়ে আমাকে বলত, মা আমার বুকের মধ্যে যন্ত্রণা হচ্ছে। আমি মেয়েকে বলি, কালকে তো ছুটি দিয়ে দেবে। তোকে নিয়ে গিয়ে মালদহে দেখাব। গতকাল রাতে মেয়ে ছটফট করছিল। জামাইকে ডাকি। ডাক্তারদের ডাকি। নার্সিংহোমের লোকরা বলে, যা মেডিসিন দেওয়ার দিয়ে দিয়েছি।” চিকিৎসার গাফিলতিতে তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এবিষয়ে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, “ওই প্রসূতি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। পরিবারের তরফে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন।” পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ।