নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মেদিনীপুরঃ খাটিয়ায় রোগী। চারদিকে কয়েকজন ধরে হেঁটে চলেছেন। খুব সাবধানে হাঁটছেন। কারণ, তাঁদের পা-ও পিছলে যেতে পারে। গাড়ি তো দূর অস্ত। হেঁটে চলাও বিপজ্জনক। রাস্তার এই ছবি দেখলে বুক কেঁপে উঠতে পারে। ভিনরাজ্য নয়। এই ছবি বাংলার। খাটিয়ায় রোগীকে নিয়ে দেড় কিমি হেঁটে বাড়ি পৌঁছতে হল। রাস্তার বেহাল এই ছবি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা দু নম্বর ব্লকের বসনছোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত যদুপুর গ্রামের।
স্থানীয়দের বক্তব্য, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে যদুপুর গ্রামের গ্রামীণ রাস্তাটি বেহাল অবস্থা। একাধিকবার ক্ষোভ বিক্ষোভ দেখিয়েও রাস্তা মেরামত হয়নি। কিছুদিন আগে বন্যায় শিলাবতী নদীর পাড়ের উপর গ্রামের যাতায়াতের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ভেঙে যায়। বর্তমানে কাদামাটির রাস্তায় হেঁটে চলাও অসম্ভব হয়ে উঠেছে। গ্রামের বাসিন্দা যমুনা বেরার কোমর ভেঙে গিয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। এখন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পথে গ্রামের দেড় কিলোমিটার পথ তাঁকে খাটিয়ায় করে বাড়িতে নিয়ে গেলেন পরিবারের সদস্যরা।
তবে বেহাল রাস্তায় এমন ঘটনা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গ্রামের মানুষজন। তাঁদের বক্তব্য, স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এভাবেই যাতায়াত করতে হয় তাঁদের। যদিও এলাকার তৃণমূল বিধায়ক অরূপ ধাড়া বলেন, “হড়পা বানের ফলে রাস্তাটি ভেঙে গিয়েছে। সেটা আমরা জানি। দ্রুত রাস্তা মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। হড়পা বানে যেসব এলাকায় বাঁধ ভেঙেছে, প্রশাসন সেগুলি খতিয়ে দেখছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দ্রুত বাঁধ মেরামত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
কিন্তু, কোনও নির্দিষ্ট সময় বলতে চাইলেন না বিধায়ক। বারবার বললেন, যত দ্রুত সম্ভব বাঁধ মেরামত করে দেওয়া হবে। কয়েকদিন আগে সবংয়েই এমন একটি ছবি দেখা গিয়েছিল। অ্যাম্বুল্যান্স বাড়ির কাছে আসতে না পারায় এক কিশোরীকে দেড় কিলোমিটার রাস্তা দোলনায় চাপিয়ে নিয়ে যান পরিজনরা। তারপর গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। ওই কিশোরী গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান, কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে।