অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ প্রতিশ্রুতি মতো এসএসসি (স্টাফ সিলেকশন কমিশন) কথা দিয়েও তালিকা প্রকাশ না করায় রাতভর চাকরীহারারা আন্দোলনে চালাচ্ছেন। এরইমধ্যে সকালে এক জন চাকরীহারা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে চিকিৎসক তমোনাশ ঘোষ দেখতে আসেন। পালস রেট মাপেন। সঙ্গে ওআরএস খাওয়ানো হয়। পাশে, মাথার কাছে সহযোদ্ধারা বসে রয়েছেন।
যখন চিকিৎসক ওই চাকরীহারা মহিলার পালস রেট দেখছিলেন তখন সহযোদ্ধারা চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘‘চিকিৎসা করতে হবে না, আমরা এখানেই মরব।’’ আর প্রতিটি কথায় শ্লেষ ঝরে পড়ছে। কান্নায় ভেঙে পড়েন। চিকিৎসককে সামনে পেয়েও চাকরীহারারা নিজের কষ্টের কথা বলতে থাকেন। এক জন চাকরীহারা জানান, “আমার বাচ্চাটা কি খাবে স্যর! আপনারা তো দেখছেন আমাদের অবস্থা, কিছু করুন স্যার। আমাদের বাচ্চার ইচ্ছাটাই শেষ।” কিন্তু ওই চাকরীহারার অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক।
চিকিৎসক বলেন, “শরীর থেকে প্রচুর জল বেরিয়ে গেছে। পর্যাপ্ত জলও রাস্তায় পাচ্ছে না। ওরা জল খেতেও পারছে না। জল খাওয়ার পর বাথরুম যেতে হলেও সমস্যা। কারণ এখানে সমস্ত বাথরুম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে মহিলারা অনেক কম জল খেয়েছেন, বাথরুম যেতে পারবেন না বলে। তাতে শরীরে ডিহাইড্রেশন দেখা দিচ্ছে।” কিন্তু শত কষ্টেও যতক্ষণ না ফয়সলা হচ্ছে, ততক্ষণ তারা এখানেই বসে থাকবেন বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। আরেক জন চাকরীহারার কথায়, “আমাদের বাড়ির লোক তো আমাদের মুখে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে। আমরা কি করব? আমাদের জন্য সরকার না ভাবলে আমরা এটাই চালিয়ে যাব। আমরা তো মরে গিয়েছি। আমাদের শুধু শরীরটা রয়েছে, আত্মা শেষ হয়ে গিয়েছে।”