মিনাক্ষী দাসঃ উত্তর চব্বিশ পরগণাঃ প্রায় তেরো মাস প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা তথা বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। কিন্তু এবার সরবেড়িয়া অঞ্চলের একটি পরিবার ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) ও সিবিআইয়ের (সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন) কাছে অভিযোগ করেছেন যে, ‘‘শেখ শাহজাহান এবং তার বাহিনী তাদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন।’’ এর আতঙ্কে ওই পরিবারের সদস্যরা কার্যত ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন।
ওই মণ্ডল পরিবারের দাবী, ‘‘সরবেড়িয়ার মোড়ে ‘শেখ শাহজাহান মার্কেট’ নামে যে বড়ো বাজারটি রয়েছে, সেটা ওই পরিবারের জমির উপর তৈরী। ২০১১ সালে শেখ শাহজাহান তাদের জায়গা দখল করে ওই বাজার তৈরী করেছিলেন।’’ তাই জমি ফেরানোর দাবীতে ইডি ও সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগও দায়ের করা হয়। অভিযোগের তদন্তে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ওই বাজারে অভিযানও চালিয়েছে। কিন্তু এখনও সেই মামলা ঝুলে আছে।
ওই পরিবারের অভিযোগ, ‘‘দিন দুয়েক আগে শাহজাহানের অনুগামী মফিজুল মোল্লা ফোন করেন। মফিজুল ওই মাছের আড়তে কাজ করত। পরিবারের কর্তা রবিন মণ্ডল ফোনটি ধরতে মফিজুল হঠাৎই বলে, ‘ভাই ফোন করেছে, কথা বল।’ রবিনবাবু ফোন ধরে কে বলছেন বলতেই কনফারেন্স কলে ভেসে আসে, ‘আমি শেখ শাহজাহান বলছি। খুব বাড় বেড়েছিস। তোরা মার্কেট নিয়ে অতি বাড়াবাড়ি করছিস। তোদের বাড়িঘর ভাঙচুর করব। বোমাবাজি করে দেব। বাড়ি থেকে বেরোনো বন্ধ করে দেব।’”

- Sponsored -
ইতিমধ্যে ওই পরিবারের তরফে গোটা ঘটনার বিবরণ ইডিকে জানানো হয়েছে। পরিবারের বয়স্কা সদস্য শিখা মণ্ডল জানান, ‘‘ফোনে হুমকি দেওয়ার পরে আমরা আতঙ্কে আছি। বাড়ির গেটে তালা বন্ধ করে বসে আছি। প্রতিবেশীদের দিয়ে বাজারহাট করাচ্ছি। আমরা এর সুরাহা চাই।’’ অন্য দিকে, যার ফোন থেকে রবিনের কাছে ফোন এসেছিল, সেই মফিজুল জানিয়েছে, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে। আমার সঙ্গে কারোর কথা হয়নি।’’
প্রসঙ্গত, গত ৫ ই জানুয়ারী ইডি রেশন দুর্নীতির তদন্তে শাহজাহানের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে ইডি আধিকারিকেরা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার কয়েক দিন পরে সন্দেশখালিতে শাহজাহান এবং তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের বড়ো অংশ ক্ষোভ উগড়ে দেন। এমনকি নারী নির্যাতনের অভিযোগও তোলেন। এরপর নারী নির্যাতন, জমিদখল, মাছের ভেড়ির লিজের টাকা না দেওয়ার মতো বিভিন্ন অভিযোগে বিজেপি সহ বিরোধী দলগুলি পথে নামে।
তবে তৃণমূল প্রথম থেকে নারী নির্যাতনের বিষয়টি সাজানো বলে দাবী করে। যদিও ঘটনাক্রমে শাহজাহান সহ শাহজাহানের কয়েক জন অনুগামী গ্রেফতার হয়েছেন। কিন্তু এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে যে, তবে কি জেল বন্দি শেখ শাহজাহান জেলে বসেই ফোন ব্যবহার করছেন? নিয়মিত অনুগামীদের সাথে যোগাযোগ রেখেছেন?