চয়ন রায়ঃ কলকাতাঃ যাদবপুরকাণ্ডের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর পুলিশের তরফে পুলিশ ফাঁড়ি তৈরী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই মর্মে লালবাজার অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইন্দ্রজিৎ বন্দোপাধ্যায় জানান, “আমরা চিঠি পেয়েছি। উপাচার্যের তত্ত্বাবধানে চিঠি রয়েছে। তবে এখনো অবধি এই নিয়ে কিছু সিদ্ধান্ত হয়নি। উপাচার্য যেমন নির্দেশ দেবেন সেই অনুযায়ী কাজ হবে।’’
সূত্রের খবর, গতকাল রাতেরবেলা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যের কাছে লালবাজারের তরফে ইমেল করা হয়। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী লালবাজারের তরফে দিনরাতের জন্য ‘পুলিশ আউট পোস্ট’ বসানো হবে। যেখানে সব সময় কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিককে রাখা হবে। এই ফাঁড়ি যাদবপুর থানার অধীনস্থ হবে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথায় কতটা জায়গা নিয়ে এই ফাঁড়ি তৈরী হবে লালবাজারের পক্ষ থেকে সেই সবের বিস্তারিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলেই দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
ইতিমধ্যেই এই চিঠিকে কেন্দ্র করে পড়ুয়া ও ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে দ্বিমত তৈরী হয়েছে। এসএফআই ছাত্র নেতা অর্ণব মণ্ডল জানান, ‘‘আসলে তৃণমূল বাইরে থেকে কিছু করতে না পেরে ভিতরে পুলিশের নামে তাদেরই লোক দিয়ে নজরদারী চালাবে। এর আগে কোনোদিন ক্যাম্পাসে পুলিশ আসেনি। আমরা চাই না এখনো পুলিশ আসুক।’’ যাদবপুর ইউনিটের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি কিশলয় রায় এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পয়লা মার্চের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়াও রাত বাড়লেই ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য বাড়ে। তাই পুলিশ আউট পোস্ট বসলে নিরাপত্তা সুরক্ষিত হবে।’’
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহের সোমবার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্র ক্যাম্পাসে পুলিশ নিয়ে আসেন। তার জেরেই আবারও পড়ুয়ারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। যার প্রতিবাদে ইংরেজী এবং ইতিহাস বিভাগের পড়ুয়ারা ইউজি আর্টস বিল্ডিংয়ের করিডরের মাটিতে বসেই ক্লাস করে। আর যত দিন অবধি ওমপ্রকাশ মিশ্রের বিরুদ্ধে কোনোরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত এভাবেই ক্লাস চলবে বলে পড়ুয়ারা জানিয়েছে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে তৎকালীন উপাচার্যের কথায় রাতের অন্ধকারে পুলিশ ক্যাম্পাসের ভিতরে ঢুকেছিল। যার জেরে ক্যাম্পাস জুড়ে ছাত্র আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল। যা পরবর্তীকালে ‘হোক কলরব’ এর রূপ নেয়। পরে এই আন্দোলনের ফলে বঙ্গ রাজনীতি উত্তাল হয়ে যায়। এমনকি তৎকালীন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীকে পদত্যাগও করতে হয়েছিল।