অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ আজ আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার কাণ্ডের পাঁচ মাস পূর্ণ হয়েছে। আর ওই ঘটনার বিচার চেয়ে আবার জুনিয়র চিকিৎসকরা পথে নামলেন। এমনকি জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের তরফে কলেজ স্কোয়্যার থেকে শ্যামবাজার অবধি মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেই কর্মসূচীতে বহু সাধারণ মানুষও পা মিলিয়েছেন। পাশাপাশি জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম মুখ অনিকেত মাহাতো, দেবাশিস হালদার, আসফাকুল্লা নাইয়া প্রমুখ মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। মিছিল শেষে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে সারা রাত অবস্থানে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এদিন শিয়ালদহ আদালতে আরজি কর কাণ্ডের বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। সিবিআই (সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন) এই ঘটনায় এক জন সিভিক ভলান্টিয়ারকেই অভিযুক্ত হিসাবে দেখিয়েছে। আদালতে সিভিক ভলেন্টিয়ারের সর্বোচ্চ শাস্তির পক্ষেও সওয়াল করা হয়েছে। আগামী ১৮ ই জানুয়ারী এই মামলায় সাজা ঘোষণা করা হবে। তবে তার আগে জুনিয়র চিকিৎসকরা সিবিআইয়ের তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন। তাঁদের কথায়, ‘‘অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার একা নন, আরো অনেকে এই ঘটনার সাথে জড়িত। কিন্তু তারা পার পেয়ে যাচ্ছেন।’’
এদিন বিকেলবেলা ৪টের পর কলেজ স্ট্রিট থেকে মিছিল শুরু হয়। শ্যামবাজারে পৌঁছে জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধিরা অবস্থানে বসেন। অনেক সাধারণ মানুষও এই অবস্থানে অংশ নিয়েছেন। দেবাশিস হালদার অবস্থান মঞ্চ থেকে জানান, ‘‘১৮ তারিখ আদালত রায় ঘোষণা করবে। বোঝাই যাচ্ছে, সিবিআইয়ের প্রাথমিক চার্জশিটের ভিত্তিতে অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারকে দোষী সাব্যস্ত করা হবে। সে যদি জড়িত থাকে, সাজা পাক। কিন্তু এটাই তো পুরো বিষয় নয়। যারা এই ঘটনাকে সুইসাইড বলে চালাতে চাইল, তথ্যপ্রমাণ লোপাট করলো, আরো যারা এই ঘটনায় জড়িত, সিএলএসএফ রিপোর্ট, ডিএনএ পরীক্ষা-সহ বিভিন্ন রিপোর্টের যে অসঙ্গতি, তার তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করতে হবে।
আর যত দিন তা না হচ্ছে, তত দিন ন্যায় বিচার পেয়েছি বলে আমরা মনে করছি না। আমাদের আন্দোলন তত দিন চলবে।’’ অপর আন্দোলনকারী আসফাকুল্লা নাইয়া বলেন, ‘‘সিভিক ভলেন্টিয়ারকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে। এই ঘটনার মোটিভ কি? জানা দরকার। সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনও ক্ষোভ রয়েছে।’’ অনিকেত মাহাতো বলেন, ‘‘এক জনের পক্ষে এই ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়। আরো কারা এর সাথে জড়িত, তাদের উদ্দেশ্য কি ছিল, এখনো অবধি আমাদের কাছে তা স্পষ্ট নয়। আমাদের আন্দোলন চলবে।’’