নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বর্ধমানঃ গত ৯ ই আগস্ট আর জি করের জুনিয়র চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধারের দিন আর জি করের সেমিনার হলে লাল জামা পরিহিত অভীক দে-কে দেখা গিয়েছিল। অথচ অভীক দে আর জি করের চিকিৎসক বা পড়ুয়া কেউ নন। তিনি এসএসকেএম হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসক। আবার অভীক দে-র বর্ধমান মেডিকেল কলেজেও ব্যাপক প্রতিপত্তি। কলেজের গেস্ট রুম নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করতেন। এছাড়া চিকিৎসক বদলির ক্ষেত্রেও যথেষ্ট ভূমিকা থাকত। এমনকি পরীক্ষায় পাশ করানোর নামে টাকা তোলারও অভিযোগ রয়েছে।
কিন্তু ওই দিন অভীক দে সেখানে গিয়েছিলেন কেন? তা নিয়ে প্রশ্নও উঠতে থাকে। পাশাপাশি চিকিৎসকদের একাংশ বর্ধমান মেডিকেল কলেজে তার প্রভাব নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। আর গতকাল সকালবেলা থেকেই বর্ধমান মেডিকেল কলেজে অভীক দে-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ বাড়তে থাকে। দুপুরবেলা থেকে কলেজের কাউন্সিলের সাথে জুনিয়র চিকিৎসদের টানা বৈঠক চলে। এই বৈঠকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী মুখোপাধ্যায় সহ হাসপাতালের সুপার তাপস কুমার ঘোষ উপস্থিত ছিলেন।
এরপর একটানা প্রায় ছ’ঘন্টা বৈঠকের পর কাউন্সিল জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবী মেনে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় যে, অভীক দে-কে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে কোনোভাবে ঢুকতে দেওয়া হবে না। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার সুহোত্র মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “অভীক দে-কে একদমই ঢোকানো যাবে না। তার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য দপ্তরকে জানানো হবে। এছাড়া আরো দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তারাও যাতে কলেজে না ঢোকেন, সেটাও নিশ্চিত করা হবে।”
অন্যদিকে, আন্দোলনকারী চিকিৎসক গৌরাঙ্গ প্রামাণিক জানিয়েছেন, “একাধিক অভিযোগ লিপিবদ্ধ হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করে তিন সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” আর সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হওয়ার পর তৃণমূল ছাত্র পরিষদ থেকে অভীক দে-কে বরখাস্ত করা হয়েছে। রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কর ভট্টাচার্য একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এই কথা জানিয়েছেন। তারপরই চিকিৎসক গৌরাঙ্গ প্রামাণিক জানিয়ে দিলেন, “এতদিন ঘুমিয়ে ছিল। সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করতেই টনক নড়ল।” তবে কি সন্দীপ ঘোষের পর এবার সিবিআই অভীক দে-কে গ্রেফতার করবে?