নিজস্ব সংবাদদাতাঃ উত্তরপ্রদেশঃ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর এবার উত্তরপ্রদেশের গোন্ডা জেলার মতিগঞ্জ ও ঝিলহি রেলওয়ে স্টেশনের মাঝে চণ্ডীগঢ়-ডিব্রুগড় এক্সপ্রেসের মোট ১৫টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর জেরে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় মোট ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর প্রায় ২৫ জন আহত হয়েছেন। রেলের আধিকারিকরা খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। এছাড়া জওয়ানদের একটি দল স্থানীয় প্রশাসনকে উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করতে ঘটনাস্থলে রওনা দিয়েছে।
সূত্রের খবর, গতকাল রাতেরবেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে এক্সপ্রেসটি চণ্ডীগড় থেকে ছেড়েছিল। এদিন দুপুরবেলা ঝিলহি স্টেশনের কাছাকাছি আসার পর হঠাৎ একটা বিকট শব্দ হয়ে ট্রেনটি কাঁপতে শুরু করে ও লাইনচ্যুত হয়। আর যাত্রীরাও ভয়ে চিৎকার করে ওঠে। এরপর ট্রেনটি থামতেই আতঙ্কিত যাত্রীরা ট্রেনটি থেকে জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে আসেন। আবার অনেকে ট্রেনের দরজা বেয়ে উঠে ভিতর থেকে জিনিসপত্র বের করতে থাকেন। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ট্রেনটির চারটি এসি কোচ সবথেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দুটি বগি একেবারে উল্টে গিয়েছে।
এই দুর্ঘটনার পরই রেল প্রশাসনকে খবর দেওয়া হয়। তারপর রেলের আধিকারিকরা দুর্ঘটনাস্থলে আসতেই উদ্ধারের কাজ শুরু হয়। পাশাপাশি রেলের মেডিকেল দল দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সহ সরকারী কর্তাদের অবিলম্বে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর এবং ত্রাণের কাজে দ্রুততা আনার নির্দেশ দিয়েছেন। আহতদের সবরকম চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন।
উত্তরপ্রদেশের ত্রাণ কমিশনার জিএস নবীন কুমার জানান, “লখনউ ও বলরামপুর থেকে একটি করে এনডিআরএফ দলকে দুর্ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তিনটি জেলা থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা দল পাঠানো হয়েছে। উদ্ধারকাজে পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্সও মোতায়েন করা হয়েছে এবং আরো অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে উদ্ধারকর্মীরা আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আপাতত আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা চলছে। গুরুতর আহতদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।”
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও দুর্ঘটনা সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার সাথে সাথে পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। আর উত্তরপ্রদেশ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। কিন্তু এই দুর্ঘটনা ঘটেছে কিভাবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে লাইনে কিছু পড়েছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, রেলের তরফে বিভিন্ন স্টেশনে বেশ কয়েকটি হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে- গোন্ডা- ৮৯৫৭৪০০৯৬৫, ডিব্রুগড়- ৯৯৫৭৫৫৫৯৬০, মারিয়ানি- ৬০০১৮৮২৫১০, লখনউ- ৮৯৫৭৪০৯২৯২, ফুরকেটিং- ৯৯৫৭৫৫৫৯৬৬, তিনসুকিয়া- ৯৯৫৭৫৫৫৯৫৯, সিমালগুড়ি- ৮৭৮৯৫৪৩৭৯৮ ও বাণিজ্যিক নিয়ন্ত্রণ- ৯৯৫৭৫৫৫৯৮৪।