নিজস্ব সংবাদদাতাঃ উত্তরাখণ্ডঃ এবার রামদেবের পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সংস্থার ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর’ বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করলো। গতকাল শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, গত এপ্রিল মাসে উত্তরাখণ্ড সরকারের লাইসেন্সিং বিভাগ পতঞ্জলির যে চোদ্দটি পণ্য উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল, অবিলম্বে সেগুলির বিজ্ঞাপন ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম, সমাজমাধ্যম সহ অন্যান্য মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে।
বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতাকে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ ওই প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন প্রত্যাহার সংক্রান্ত পুরো বিষয়টির উপর ‘ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনকে’ (আইএমএ) নজর রাখতে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন পতঞ্জলির বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। গত বছর নভেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্ট পতঞ্জলিকে বিভিন্ন রোগের প্রতিকার হিসাবে নিজেদের ওষুধ সম্পর্কে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর মিথ্যা প্রচার করার বিষয়ে সতর্ক করেছিল। জরিমানা হতে পারে বলেও মৌখিক ভাবে জানিয়েছিল।
মামলার শুনানি চলাকালীন পর্যবেক্ষণে বলা হয়, এই ধরণের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে গোটা দেশকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট মন্তব্য, ‘‘সরকার চোখ বন্ধ করে বসে আছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। সরকারকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।’’ প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৩ শে জুন প্রথম বার পতঞ্জলি করোনিল কিট বাজারে এনেছিল। ‘করোনিল’ এবং ‘শ্বাসারি বটি’ নামে দু’ধরনের ট্যাবলেট এবং ‘অণু তৈল’ নামের ২০ মিলিলিটারের একটি তেলের শিশি নিয়ে তৈরী ওই কিটের দাম ৫৪৫ টাকা রাখা হয়েছিল। এছাড়া আলাদা ভাবে তেল ও ট্যাবলেট কেনা যাবে বলেও জানানো হয়েছিল।
এরপর ১৮ ই অক্টোবর অবধি মোট ২৩ লক্ষ ৫৪ হাজার করোনিল কিট বিক্রি হয়েছে বলে সংস্থার তরফে বিজ্ঞাপনে জানানো হয়েছিল। আর ওই বিজ্ঞাপন নিয়ে আপত্তি জানিয়ে মামলা করা হয়েছিল। আইএমএর অভিযোগ ছিল, ‘‘পতঞ্জলির বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা ও চিকিৎসককে অসম্মান করা হয়েছে। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। কোভিড প্রতিরোধী না হওয়া সত্ত্বেও শুধু করোনিল কিট বিক্রি করেই পতঞ্জলি আড়াইশো কোটি টাকার বেশী মুনাফা করেছিল। আর এর জন্য মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনী প্রচার চালানো হয়েছিল।’’ সেই মামলার জেরে পতঞ্জলির চোদ্দটি পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।