নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মেদিনীপুরঃ ভোটের মুখে অগ্নিগর্ভ নন্দীগ্রাম। গতকাল গভীর রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া এলাকায় বিজেপির এক জন মহিলা কর্মীকে খুনের পর থেকেই জ্বলছে এলাকা। পুরো এলাকায় ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরী হয়। বিশাল পুলিশবাহিনী কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে লাঠিচার্জ করে উপস্থিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে।
অভিযোগ, নির্বাচনী প্রচারের শেষে সোনাচূড়ার মনসাপুকুর বাজার এলাকায় বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা রাতপ্রহরা দিচ্ছিলেন। তখন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বাইকে এসে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ওপর চড়াও হয়। ওই সময় রথীবালা আড়ি নামে এক জন মহিলা বিজেপি কর্মী ছেলে সঞ্জয় আড়িকে দুষ্কৃতীদের হাত থেকে রক্ষা করতে গেলে তারা রথীবালা দেবীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ চালালে তিনি রক্তাক্ত হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে। এরপর চিৎকার শুনে এলাকাবাসীরা ছুটে আসলে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যান।
তারপর দ্রুত আহতদের নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ওই রথিবালা দেবীর মৃত্যু হয়। আর সঞ্জয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সকালবেলা থেকে একের পর এক দোকানে আগুন লাগানো হয়। আসবাবপত্রের দোকান থেকে আসবাব রাস্তায় নামিয়ে তাতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এমনকি গাছ ফেলে রাস্তা অবরোধ করা হয়। পাশাপাশি নন্দীগ্রাম থানার সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে বিজেপির নেতা-কর্মীদের অবরোধ তুলে নিতে বার বার আবেদন করলেও লাভ হয়নি। ফলে শেষমেশ উপস্থিত জনতাকে লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এলাকার বিজেপি নেতা মেঘনাদ পাল এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানান, “তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ভোটের মুখে এলাকায় সন্ত্রাস ছড়াতে এই হামলা চালিয়েছে। বুধবারই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে সভা করতে এসেছিলেন। তাঁর সভার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিজেপি কর্মীদের ওপর যেভাবে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়েছে, তা নক্কারজনক।
এই হামলায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।’’ তবে তৃণমূল এই ঘটনার দায় অস্বীকার করে বিজেপির অর্ন্তদ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছে। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসককে দ্রুত রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার সাথে সাথে অশান্তি প্রবণ অঞ্চলে রুট মার্চ করানোর নির্দেশ দিয়েছে।