নিজস্ব সংবাদদাতাঃ জলপাইগুড়িঃ জলপাইগুড়ির ঘটনায় রাত জেগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা এলাকার পরিস্থিতি ঘুরে দেখলেন। মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করা ছাড়াও হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সাথে কথা বলেন। এমনকি ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিজে খতিয়ে দেখেছেন।
রাতে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘‘রাজ্য সরকার পাশে আছে। এখন যেহেতু এমসিসি চলছে, তাই প্রশাসন যা করার করবে। একটা বাচ্চাকে নেওটিয়া হাসপাতালে আনা হচ্ছে, ওটা কাল বিকেলে অভিষেক এসে দেখে নেবে। প্রশাসন যা করার করবে। এখানে সবটা বলছি না। পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য প্রশাসন যা করার করছে। ত্রাণ সরবরাহের কাজ চলছে। এছাড়া পুলিশ, ডিএমজি, জেলা ও ব্লক প্রশাসন, এবং কুইক রেসপন্স টিম বিপর্যয় মোকাবিলায় কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’
এদিকে আজ ভোরবেলা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জলপাইগুড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে জলপাইগুড়ির ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন। যারা এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, ‘‘জলপাইগুড়িতে ঝড়ে প্রাণহানি ঘটেছে। অনেকে আহত। আমি উদ্বিগ্ন। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে কথা হয়েছে। সকলে একসাথে পরিস্থিতি মোকাবিলার কাজ করছেন। আমি নিজে পরিস্থিতির তদারকি করব। মানুষের সাথে কথা বলব। তাদের অভিজ্ঞতার কথা শুনব। যা যা করা সম্ভব করব। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তরের সাথেও কথা বলব।’’
প্রসঙ্গত, গতকাল আচমকা জলপাইগুড়ি শহর, ময়নাগুড়ি এবং ধূপগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা ঝড়-বৃষ্টিতে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে। আর পাঁচ জনের মৃত্যুও হয়েছে। যাদের মধ্যে দু’জন জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা। এক জন গোসালা মোড় ও অন্য জন সেন পাড়ায় থাকতেন। দু’জন ময়নাগুড়ির বার্নিশ এলাকার বাসিন্দা। আহতরা কেউ কেউ জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আবার কয়েক জনকে শিলিগুড়ির হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও এখানে আসছেন। তার আগে বলেছেন, ‘‘জলপাইগুড়িতে প্রায় আটশো বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বাড়িগুলি টিন দিয়ে তৈরী ছিল। এই সময়ে সরকারের মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। কারণ বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে সরকার আদর্শ আচরণবিধির আওতায় পড়ে না। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও জলপাইগুড়িতে কাজ করছে। তাদের বেশী করে দায়িত্ব নিতে হবে। আমরা রাজনৈতিক কর্মী বা জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনী বিধির কারণে বেশী কিছু করতে পারব না। কেবল পাশে থাকতে পারি। তাই সংগঠনগুলিকে দায়িত্ব নিতে হবে।
আশা করব, অন্য রাজনৈতিক দল এবং প্রশাসন রাজনীতি দূরে রেখে কাজ করবে।’’ বিকেলে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জলপাইগুড়িতে পৌঁছে যাবেন। এদিকে আজ এখানে আবহাওয়া প্রতিকূল। উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বইছে। আকাশের মুখ ভার। মাঝেমধ্যে মেঘ ডাকছে। উত্তরের জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।