নিজস্ব সংবাদদাতাঃ নদীয়াঃ নদীয়ার করিমপুর থানা এলাকার জয়নাবাদ গ্রামে নিজের গোরুকে বাঁচাতে গিয়ে মৌমাছি হামলায় মৃত্যু হলো গুরুদাস ঠিকাদার নামে এক জন তৃণমূল নেতার। গুরুদাসবাবু এক জন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী ছিলেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গুরুদাসবাবুর বাড়ির গোয়াল থেকে একটা গোরু বাড়ির পিছনের জঙ্গলে চলে গিয়েছিল। এরপর তিনি গোরু ধরতে পিছন পিছন ছুটেছিলেন। সেখানে জঙ্গলের মধ্যে একটি গাছে মৌমাছির বড়ো চাক ছিল। তখন গোরুটি ওই গাছে ধাক্কা মারলে মৌমাছির দল উড়ে এসে প্রথমে গোরুটিকে ছেঁকে ধরে। এরপর গুরুদাসবাবু গোরুটিকে বাঁচাতে সেদিকে ছুটে গেলে তার মুখে ও মাথায় প্রায় দু’শো মৌমাছি হুল ফুটিয়ে দেয়। তারপর গুরুদাসবাবু তারস্বরে চিৎকার করতে থাকেন।
গুরুদাসবাবুর চিৎকার শুনে পরিবারের সদস্যরা ছুটে এসে গামছা দিয়ে একটা একটা করে মৌমাছির হুল বার করে দ্রুত তেহট্টের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে তার মৃত্যু হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবী, ‘‘মৌমাছিগুলি আকারে বেশ বড়ো। শরীরের বেশীরভাগ অংশ কালো। আর সামান্য হলদেটে ছোপও রয়েছে। সচরাচর এই ধরণের মৌমাছি এলাকায় দেখা যায় না।’’
ছেলে সৌরভ জানায়, ‘‘প্রায় দশ বছর আগে বাবা সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিলেও নিয়মিত শরীরচর্চা করতেন। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন। সামান্য মৌমাছির কামড়ে যে মৃত্যু হল, এটা ভাবতেই পারছি না।’’ বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ শান্তনু ঝা বলেন, ‘‘বিবরণ শুনে মনে হচ্ছে ওখানে ‘এপিস ডরসাটা’ মৌমাছির চাক ছিল। শত্রুর আক্রমণ বুঝতে পারলে ওরা দল বেঁধে দ্রুত আক্রমণ করে। এছাড়া একটি মৌমাছির হুলের বিষ সামান্য হলেও অনেক মৌমাছি একসাথে কামড়েছে বলে সম্মিলিত বিষক্রিয়ায় এই মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।’’