মিনাক্ষী দাসঃ উত্তর চব্বিশ পরগণাঃ গত ৫ই জানুয়ারী থেকে রাজ্যের সমস্ত খবরের শিরোনামে উত্তর চব্বিশ পরগণার সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের নাম উঠে এসেছিল। দু’মাস অর্থাৎ পঞ্চান্ন দিনের নাটকীয় টালবাহানা পর্বের শেষে আজ মিনাখাঁ থেকে সন্দেশখালির নিখোঁজ শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপর বসিরহাট আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার জানান, ‘‘শাহজাহানের বিরুদ্ধে ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯ সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর এর ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এতদিন তিনি কোথায় লুকিয়ে ছিলেন, তা তদন্তের স্বার্থে গোপন রাখা হচ্ছে।’’ উল্লেখ্য যে, ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) রেশন দুর্নীতি মামলায় শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গেলে তার অনুগামীরা ইডির (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) উপর হামলা সহ গাড়ি ভাঙচুর করে। এরপর থেকে এলাকাবাসীরা শাহজাহানের বিরুদ্ধে হুমকি, অত্যাচার, মারধর, জোর-জুলুম, জমি দখল সহ যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, ‘‘শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে কোনো বাধা নেই। কোনো স্থগিতাদেশ তাতে দেওয়া হয়নি।’’ এদিকে তার গ্রেফতারী নিয়ে তৃণমূলের নেতা শান্তনু সেন জানান, ‘‘শাহজাহানের গ্রেফতারী প্রমাণ করে আমাদের সরকার রাজধর্ম পালন করে। আমরা পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছি। শিবু হাজরা এবং উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে দল। ঠিক একইভাবে এবার শাহজাহান গ্রেফতার।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন কোর্টের স্টে অর্ডারের কারণেই তাকে গ্রেফতার করা যাচ্ছিল না। তারপর স্টে অর্ডার সরানোর তিন থেকে চারদিনের মধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। একদিকে বিজেপি শাসিত রাজ্যে অভিযুক্তরা নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়ান। অন্যদিকে, প্রমাণ মিললে প্রশাসন অভিযুক্ত কোনো নেতাকেই রেয়াত করে না। বিজেপির উচিত তৃণমূলের থেকে রাজধর্ম শেখা।’’
পাল্টা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘রাজ্য বিজেপির লাগাতার চাপের জেরে শেষ অবধি সরকার শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়েছে। আমি তো আগেই বলেছিলাম, আমরা সরকারকে এই গ্রেফতারী করতে বাধ্য করব। আজ বিজেপি ও সন্দেশখালির মহিলাদের লাগাতার ধর্না এবং বিক্ষোভের ফলে শেষ অবধি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার সরকার শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়েছে।’’