অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ বিধাননগর পুলিশ চাকরীপ্রার্থীদের অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেও আন্দোলনকারীরা না ওঠায় অবশেষে গতকাল রাতেরবেলা ১২ টা ৩০ মিনিট নাগাদ পুলিশ তাদের জোর করে তুলে দিলেন। ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের ধাপে ধাপে আটক করে বাসে করে সল্টলেকের করুণাময়ী থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। কিছু আন্দোলনকারী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থলে র্যাফ ও বিশাল পুলিশ বাহিনী নামানো হয়েছিল।
কিন্তু এত কিছুর পরেও ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণরা নিজেদের অবস্থানে অনড় ছিলেন। রাতেরবেলা পুলিশ এসে তাদের সঙ্গে কথা বলে। কাউকে কাউকে বাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে রাতেরবেলা বেশীর ভাগই নিরাপত্তার কারণে কোথাও যেতে রাজি হননি। পরে আরো পুলিশ আনা হয়। প্রথমে ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণেরা পুলিশকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘‘তারা সকালবেলা হলেই করুণাময়ী চত্বর ছেড়ে চলে যাবেন।’’ কিন্তু শেষমেশ পুলিশ সকলকেই সরিয়ে দেন।
যখন আন্দোলনকারীদের তুলে দেওয়া হচ্ছে তখন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা সকলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। পুলিশকে ওই ভাবে বাধা দিতে চেয়েও কোনো লাভ হয়নি। আন্দোলনকারীদের আটক করার আগে পুলিশের তরফে মাইক প্রচার করে উঠে যেতে বলা হয়। তবে অনুরোধে কাজ না হওয়ায় উচ্চপদস্থ আধিকারিকের নির্দেশে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় আন্দোলনকারীদের আটক হওয়ার ঘটনায় জানান, ‘‘পুলিশ এই আন্দোলন ভেঙে দিতে অনৈতিক ভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমরা সারা রাজ্যব্যপী এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাব। আন্দোলন চলবে।’’ পরে এসএফআই-ডিওয়াইএফআইয়ের তরেফে জানানো হয়, ‘আজ আন্দোলনস্থলে ফের জমায়েত করা হবে।’ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার টুইট করে এই ঘটনায় রাজ্য সরকারের নিন্দা করছেন।
এদিন বিজেপি নেত্রী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল করুণাময়ী এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা নিয়ে বিধাননগর পুলিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করবেন। আন্দোলনকারীদের প্রতি পুলিশী পদক্ষেপ নিয়ে বিরোধী নেতা-কর্মীরা সহ বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালও আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন। আর গত তিন দিন থেকে যে জায়গায় অনশন বিক্ষোভ চলছিল এখন সেই চত্বর একেবারে শুনশান হয়ে যায়।