অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ এবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রীত্বর পাশাপাশি দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। অর্থাৎ মহাসচীব পদ সহ দলের মোট পাঁচটি পদ থেকে বহিষ্কৃত হন। ফলে এখন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ‘তৃণমূলের সাসপেন্ডেড বিধায়ক’ হিসেবেই থাকবেন।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে জানান, ‘‘যতদিন তদন্ত না শেষ হবে ততদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় দল থেকে সাসপেন্ড থাকবেন। উনি আইনের চোখে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করতে পারলে তখন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যে সমস্ত তথ্য সামনে আসছে তার ভিত্তিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উচিত দ্রুত তদন্ত শেষ করা। কারণ এখনো সারদা কাণ্ডে বিচার সেভাবে শুরু হয়নি। সিবিআই চার্জশিটও দিতে পারেনি। এছাড়া দুর্নীতির সাথে আপস করার কোনো প্রশ্ন ওঠে না। এই বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্সে বিশ্বাসী। আর এই টাকার সাথে দলের কোনো সম্পর্ক নেই।
দলের টাকা হলে তো তা দলীয় দপ্তর থেকে উদ্ধার করা হত। তা তো হয়নি। ওই টাকা ব্যক্তি বিশেষের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। যে সমস্ত ছবি জনসমক্ষে এসেছে, তা অস্বস্তিকর। তবে যতো বড়োই নেতা হন, তাঁর যতোই জনসমর্থন থাকুক, মানুষের সাথে অন্যায় করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবেই। আমরা কাউকে আড়াল করব না।’’
ওই দুর্নীতির তদন্তের বিষয়ে রাজ্য সরকার ইডি, সিবিআই সহ সমস্ত তদন্তকারী সংস্থাকে সাহায্য করবে। তৃণমূল সাধারণ মানুষের সাথে অন্যায় হলে কোনো আপস করে না। যদি কেউ অন্যায় করে থাকেন বলে প্রমাণিত হয়, তৃণমূল তাঁকে ছেড়ে দেবে না। কেউ দলের মঞ্চ ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করলে তাঁকে দল ছেড়ে দেবে না।
তৃণমূলকে ব্যবস্থা নিতে একটু সময় তো দিতে হবে। ভারতে একটি রাজনৈতিক দলও নেই, যারা ছ’দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে। কাউকে বাঁচানোর কোনো চেষ্টা করা হচ্ছে না। মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারব না। কারোর বিরুদ্ধে জনসমক্ষে কোনো প্রমাণ এলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যদিও তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে সন্দেহ রয়েছে, তবুও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা খতিয়ে দেখুক। তবে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ বন্ধ করুক ইডি।’’
আইনজীবী তথা সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অপসারণ করে এই অন্যায় ঢাকা যাবে না।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বলেছেন, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বলির পাঁঠা করা হয়েছে।’’ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ওই পদ থেকে সরানোর প্রায় সাথে সাথেই তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়কে দলীয় মুখপত্রের সম্পাদক পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।