চয়ন রায়ঃ কলকাতাঃ এসএসসি দুর্নীতির মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইডির (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্ত্রীত্ব পদ থাকবে কিনা তা নিয়ে জল্পনা চলছিল।
কিন্তু এবার সেই জল্পনাকে সত্যি করে আজ রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে মন্ত্রীত্ব পদ থেকে সরিয়ে দিলেন। এছাড়া শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দলীয় মহাসচীব পদও যেতে চলেছে। এমনকি দলীয় মুখপত্রের সম্পাদকের পদও হারাতে চলেছেন।
আর আপাতত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অধীন তিনটি দপ্তর থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে এই বিষয়ে জানালে রাজ্যপালের তরফে ওই বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়।
মূলত, তাঁর গ্রেফতারের দিনেই তৃণমূল জানিয়ে দেয়, আদালতে দোষী প্রমাণিত হলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দল কড়া ব্যবস্থা নেবে। এদিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারীর সময় অ্যারেস্ট মেমোতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ও ফোন নম্বর দেওয়ায় তৃণমূল নেতৃত্ব রুষ্ট এবং অসন্তুষ্ট ছিলেন।
দলের এক জন প্রবীণ নেতা বলেছিলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামটা এভাবে জড়িয়ে দেওয়ার কাজটা অত্যন্ত অনভিপ্রেত হয়েছে। সেটা করে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঠিক করেননি।’’ উল্টে ওই বিষয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে সরাসরি জানিয়েছিলেন, “তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে একাধিক বার ফোন করলেও সাড়া পাননি।”
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকলেও ফোনের বিষয়টিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপর রুষ্ট হন।
অন্যদিকে বিরোধীরা অবশ্য তাঁকে মন্ত্রীসভা থেকে বহিষ্কারের দাবীতে সরব হন। এমনকি তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও ইস্তফার দাবী তুলেছিলেন। তৃণমূলের অন্দরেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী উঠলেও কেউই এই বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে নিজেদের মতামত জানাননি।
প্রসঙ্গত, কোনো মন্ত্রীকে মন্ত্রীসভা থেকে বরখাস্ত করতে গেলে প্রাথমিক ভাবে সংশ্লিষ্ট দলকে সেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। দল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে তা মুখ্যমন্ত্রীকে জানায়। তখন মুখ্যমন্ত্রী তা মন্ত্রীসভার বৈঠকে সতীর্থ মন্ত্রীদের ওই বিষয়ে অবহিত করেন।
আর রাজ্যের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের কাছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীকে বরখাস্ত করার জন্য আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠান। তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে দলের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক সুপারিশের আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই সিদ্ধান্ত ও সুপারিশ রাজভবনে পাঠিয়েছেন।