নিজস্ব সংবাদদাতাঃ কর্ণাটকঃ এবার হিজাব মামলায় কর্নাটক হাইকোর্ট রায় দিল যে, হিজাব পরা বাধ্যতামূলক ধর্মীয় অনুশীলন নয়। ফলে হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের জয় হলেও পড়ুয়ারা হাইকোর্টে এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন।
পাশাপাশি হিজাব নিয়ে রায়ের জেরে গোলমালের আশঙ্কা করে এক সপ্তাহের জন্য কর্নাটক সরকার বেঙ্গালুরু শহরে বড়ো কোনো জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ম্যাঙ্গালুরুতেও ১৫ ই মার্চ থেকে ১৯ শে মার্চ অবধি সমস্ত বড়ো জমায়েত বন্ধ। এমনকি হিজাব বিতর্কের মূল কেন্দ্র উদুপিতে আজ সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ।
প্রসঙ্গত, গত ১ লা জানুয়ারী কর্নাটকের উদুপিতে একটি প্রি-ইউনিভার্সিটিতে কয়েক জন হিজাব পরিহিত পড়ুয়াকে ক্লাসে বসতে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। কলেজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি বিজেপি বিধায়ক রঘুপতি ভট্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘‘হিজাব পরিহিতরা ক্লাসে ঢুকতে পারবেন না।’’ তাতেই রাজ্য জুড়ে সেই বিতর্ক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
হিজাবের পাল্টা হিসেবে একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন গেরুয়া উত্তরীয় পরে আন্দোলন শুরু করে। কয়েকটি জায়গায় হিজাবের পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলনকারীরা মুখোমুখি হতেই পুলিশের সঙ্গেও একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কয়েকটি জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। অনির্দিষ্টকালের জন্য সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
গত ২৬ শে জানুয়ারী কর্নাটক সরকার এই বিষয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে জানায়, কমিটি নির্দিষ্ট সুপারিশ করার আগ পর্যন্ত ছাত্রীরা কেবলমাত্র ইউনিফর্ম পরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে পারবেন। হিজাব বা গেরুয়া উত্তরীয় কিছুই পরার অনুমতি নেই।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উদুপির কয়েক জন ছাত্রী কর্নাটক হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করেন জানান, ‘‘হিজাব পরা মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। তা কোনো ভাবেই তা বাতিল করা যায় না।’’
১০ ই ফেব্রুয়ারী কর্নাটক হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রিতুরাজ অবস্তি, বিচারপতি কেএস দীক্ষিত ও বিচারপতি জেএম খাজি অন্তর্বর্তী রায়ে বলেন, ‘‘যত দিন না রায় ঘোষণা হচ্ছে ততদিন কর্নাটকে স্কুল-কলেজ খুলতে পারে কিন্তু কোনো পড়ুয়া ধর্মীয় প্রতীকমূলক কোনো পরিধান পরে আসতে পারবেন না।’’