চয়ন রায়ঃ কলকাতাঃ আজ দুপুরবেলা ১ টা ৫৪ মিনিটে বর্ষীয়ান ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্ত কলকাতার ইএম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। মৃত্যু কালে বয়স হয়েছিল প্রায় ৭১ বছর।
গত ২৩ শে জানুয়ারী প্রাক্তন উইঙ্গার-স্ট্রাইকার তথা ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্ত ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার জন্যই একাধিক রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। ধীরে ধীরে শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকে। প্রচণ্ড কাশি ও শ্বাসকষ্ট হতে থাকে। গত ২৯ শে জানুয়ারী থেকে ভেন্টিলেশনে রাখা শুরু হয়েছিল।
সাতের দশকের শুরুতে খিদিরপুর ক্লাবের জার্সি গায়ে তাঁর কলকাতা ময়দানে প্রথম আবির্ভাব। ১৯৭২ সাল থেকে দু’বছর মোহনবাগানে ছিলেন। এরপর ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে খেলেন। ১৯৮০ সালে মহমেডানে ক্লাবে সই করলেও পরের বছর ফের মোহনবাগান ক্লাবে যোগ দিয়ে তিন বছর খেলেন।
১৯৭৫ সালে আইএফএ শিল্ডের ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল ৫-০ গোলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানকে হারিয়ে দিয়েছিল। যেখানে সুরজিৎ সেনগুপ্ত তিনটি গোল দেয়। ১৯৭৮ সালে সুরজিৎ সেনগুপ্তের অধিনায়কত্বে ইস্টবেঙ্গল যুগ্মভাবে ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এছাড়া সেই বছর ইস্টবেঙ্গল ডুরান্ড কাপ এবং বরদলুই ট্রফি জয় করেছিল।
এছাড়া বেশ কয়েকবার সন্তোষ ট্রফিতে বাংলাকে চ্যাম্পিয়ন করতে তাঁর বড় ভূমিকা ছিল। এমনকি ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে এশিয়ান গেমসে প্রতিনিধিত্ব করার কৃতিত্ব রয়েছে। ফুটবলারের পাশাপাশি একজন তবলা বাদক হিসেবেও অত্যন্ত খ্যাতি ছিল। কিন্তু ২০১৭ সালে ব্যান্ডেলের পৈতৃক বাড়ি থেকে খেলোয়াড় জীবনের সব পদক, স্মারক ও সম্মান চুরি হয়ে গিয়েছিল। যা আর উদ্ধার করা যায়নি।
সুরজিৎ সেনগুপ্তর প্রয়াণে বাংলা তথা ভারতীয় ফুটবলে এক যুগের অবসান হল। সুরজিৎ সেনগুপ্তর মৃত্যুতে সমগ্র ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সুরজিৎ সেনগুপ্তর পায়ের জাদুতে আপমর ক্রীড়াপ্রেমীরা মুগ্ধ ছিলেন।