নিজস্ব সংবাদদাতাঃ হুগলীঃ শিলিগুড়ির ভক্তিনগরের এক যুবক বিয়ের সাজে অথবা বিকিনি পরিহিত ছবি তুলে মোটা টাকা উপার্জন করার বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন। আর সেই ফাঁদে একাধিক তরুণী পা দিয়ে ঘোর বিপদে পড়েছিলেন। ওই যুবক বহু তরুণীকে ছবি তোলার পর ব্ল্যাকমেল করে গয়নাও লুঠ করেছিলেন।
প্রায় চার মাস আগে এই ঘটনার সূত্রপাত। জানা গিয়েছে, হুগলীর ব্যান্ডেলের এক মহিলা চুঁচুড়া থানায় অভিযোগ করেন, “তার গয়না লুঠ হয়েছে”। এরপর পুলিশ বিষয়টির তদন্তে নেমেও অভিযুক্তের কোনো কুল-কিনারা পায়নি।
আবার শনিবার বাগুইআটির দু’জন তরুণী চুঁচুড়া থানায় একই অভিযোগ করেন যে, “তারা কৃষ্ণ ঘোষ নামে ওই যুবকের ফেসবুক প্রোফাইলে ফোটোশ্যুটের মাধ্যমে টাকা উপার্জনের কথা জানতে পেরে যোগাযোগ করে আরো জানতে পারেন যে, মডেলকে শাড়ি, বিকিনি, সালওয়ার ও বিয়ের সাজে ছবি তোলানোর জন্যই টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু বিয়ের সাজে ছবি তোলানোর জন্য নিজেদের গয়না পড়া বাধ্যতামূলক।
এছাড়াও তরুণীরা দাবী তোলেন যে, একবার ফোটোশ্যুটের জন্য ১৮ হাজার টাকা অবধি দেয়। তারপর কৃষ্ণ দু’জন তরুণীকে একটি হোটেলে নিয়ে গিয়ে সেখানে ঘর ভাড়া নিয়ে ফোটোশ্যুট করে। তারপর দু’জন তরুণীকেই ভুল বুঝিয়ে সমস্ত গয়না একটি ব্যাগে ভরে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে জানতে পারে, গত দুই বছর থেকে অভিযুক্ত যুবক চুঁচুড়া স্টেশনের কাছে একটি আবাসনে ভাড়া থাকতেন। এমনকি যাতায়াতের জন্য যে স্কুটি ব্যবহার করতেন সেটি একজন বান্ধবীর। সম্প্রতি কৃষ্ণ বেসরকারী স্বর্ণ ঋণ প্রদানকারী সংস্থায় গয়না বন্ধক রেখে ঋণও নিয়েছিলেন। কৃষ্ণ টাকা-গয়না লুঠ করার পাশাপাশি তরুণীদের সঙ্গে অশালীন আচরণও করতেন।
অবশেষে শনিবার পুলিশ কৃষ্ণর ফোনের টাওয়ার লোকেশান ট্র্যাক করে বাড়িতে গিয়ে গ্রেপ্তার করে। গতকাল কৃষ্ণকে আদালতে তোলা হলে আদালত সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠায়। কৃষ্ণর বিরুদ্ধে আর কোনো অভিযোগ আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর সাথে সাথে তরুণীদের বিকিনি পরা ছবি কোনো পর্ণ সাইটে বিক্রি করা হয়েছে কিনা সেই বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।