নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মণিপুরঃ দীর্ঘ ২১ বছরের খরা কাটিয়ে অলিম্পিকে ভারোত্তোলন বিভাগে ভারতের বড়ো সাফল্য এসেছে। মণিপুরের ইম্ফলের মেয়ে মীরাবাঈ চানুর হাত ধরে দ্বিতীয় পদক এলো। মহিলাদের ৪৯ কেজি বিভাগে মীরাবাঈ চানুর এই সাফল্য এসেছে। এর আগে ২০০০ সালের সিডনি অলিম্পিকে একই বিভাগে ভারতের কর্নম মালেশ্বরী ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন।
এই সাফল্যের পরে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী থেকে শচিন তেন্ডুলকর সহ সকল ক্রীড়াবিদ উচ্ছ্বসিত হয়ে মীরাবাঈ চানুকে অভিননন্দন জানান। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে জানান, “টোকিও অলিম্পিকে মহিলাদের ভারত্তোলনে মীরাবাঈ চানু রুপো জিতেছেন। তাঁকে আন্তরিক অভিননন্দন। তুমি আমাদের গর্বিত করেছো। তোমার সাফল্য অন্যদের কাছে অনুপ্রেরণা”।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে মীরাবাঈ চানু রিওতে প্রথম অলিম্পিকে শেষ করতে পারেননি। তাই চোখের জলে গেমস ভিলেজ ছেড়েছিলেন। জানা গিয়েছে, ১৯৯৪ সালের ৮ ই আগস্ট মাসে মীরাবাঈ চানুর ইম্ফলের নংবক কাকচিং গ্রামে জন্ম। মীরাবাঈ চানুর জন্ম থেকেই শক্তি আর পাঁচটা মেয়ের থেকে বেশী তা অনেক আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিল পরিবার। মা-বাবা জ্বালানীর জন্য বনে কাঠ কাটতে গেলেও ভারী কাঠ দাদা তুলতে না পারলেও মীরাবাঈ চানু অনায়াসেই সেই ভার বহন করে বাড়ি বয়ে নিয়ে আসতেন। মীরাবাঈ চানুর প্রথম পছন্দের খেলা তিরন্দাজি ছিল। কিন্তু মা-বাবা ইচ্ছানুযায়ী ১২ বছর বয়সে ভারোত্তোলনে ভর্তি হন।
এরপর মীরাবাঈ চানু ইম্ফলের খুমান লাম্পাক স্টেডিয়ামে অনুশীলন শুরু করেন। সেখান থেকে মণিপুর সাই হয়ে পটিয়ালায়। ক্রমে জাতীয়স্তরে নজরে আসতে শুরু করেন। এক বছর অনুশীলন করেই ছত্তিশগড় যুব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জেতেন। ২০১৪ সালে গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমসে ৪৮ কেজি বিভাগে রুপো জেতেন। তারপর কুঞ্জরাণী দেবীর ১২ বছরের রেকর্ড ভেঙে মোট ১৯২ কেজি তোলেন।
তবে ক্লিন ও জার্ক বিভাগে তিন বারই ওজন তুলতে ব্যর্থ হন। স্ন্যাচে মাত্র একবার ওজন তুলতে পেরেছিলেন। ফলে নামের পাশে কোনো সংখ্যা ছিল না। লেখা হয়েছিল ইভেন্ট শেষ করতে পারেননি অর্থাত্ ডু নট ফিনিশ। সেই শেষ না হওয়া ইভেন্ট থেকেই পাঁচ বছর পর গোটা দেশ ব্যাপী ভারতবর্ষের মুকুটে নতুন পালক এনে দিলেন।