অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ কলকাতার বিধাননগর নর্থ থানার লাবণী এস্টেটে দেখা গেল এক অদ্ভুত চিত্র। ৩২ বছর বয়সী তেলেঙ্গানার বাসিন্দা পি সামরিথ পেয়িং গেস্ট হিসেবে এখানে থাকছিলেন। একটি বেসরকারী ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু পি সামরিথের ঘরে ঢোকামাত্রই চক্ষু চড়ক গাছ। দেখা গেলো পাশে পড়ে আছে হিলিয়াম গ্যাসের সিলিন্ডার। সিলিন্ডারের সঙ্গে সংযুক্ত পাইপ ঢুকে গেছে শুয়ে থাকা এক ব্যক্তির মুখে। মুখ আবার প্লাস্টিক দিয়ে ঢাকা। তড়িঘড়ি এরপর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে পরীক্ষার পর চিকিত্সকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
চিকিত্সক তরুণ মণ্ডল বলেন, “বাচ্চাদের জন্য বেলুন ফোলাতে হিলিয়ামের ব্যবহার আছে। যেটাকে আমরা গ্যাস বেলুন বলি। তবে আদতে এটি একটি বিষাক্ত গ্যাস। যতটা গ্যাস শরীরে ঢুকবে ততটা অক্সিজেন থেকে শরীর বঞ্চিত হবে। বিশেষ করে যদি কোনো ট্যাঙ্ক বা কনটেইনার থেকে এটা শরীরে ঢোকে তাহলে যে গতিতে এটা ঢুকবে তা থেকে রক্তে বুদবুদ তৈরী হবে। যেটা মস্তিষ্ক, ফুসফুস অথবা হৃদপিণ্ডে মারাত্মক ক্ষতি করে দেবে। এমনকি ফুসফুস ফেটে গিয়ে দ্রুত মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে”।
বিধাননগর পুলিশের এক আধিকারিক বলেছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আত্মহত্যার জন্য পি সামরিথ হিলিয়াম গ্যাস ব্যবহার করেছিলেন। আত্মহত্যা করার জন্য যে পদ্ধতি ব্যবহার করেছিলেন সেই ধরনের পদ্ধতি সাধারণত দক্ষিণ ভারত ছাড়া এই রাজ্যে খুব একটা দেখা যায় না।
তিনি মুখের মধ্যে হিলিয়াম গ্যাসের পাইপ ঢুকিয়ে দেওয়ার পর যাতে ভেতরের গ্যাস বাইরে ও বাইরের গ্যাস কোনোভাবেই ভেতরে ঢুকতে না পারে সেজন্য মুখ প্লাস্টিক দিয়ে ঢাকার পর সেটি সেলোটেপ দিয়ে আটকে দিয়েছিলেন।
এছাড়া ঘর থেকে যে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করা হয়েছে সেই সুইসাইড নোটে উল্লেখ রয়েছে যে, একজন পরিজন মারা যাওয়ার পর থেকেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। অর্থাৎ পি সামরিথ সুইসাইড নোটেও নিজের অবসাদের কথা উল্লেখ করেছিলেন।