তৃণমূল-বিজেপি কর্মীদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত এলাকা
রাজ খানঃ বর্ধমানঃ ভোট মিটতে না মিটতেই দফায় দফায় বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বর্ধমান শহর। রবিবার দুপুর থেকেই বর্ধমান শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষ্মীপুর মাঠ এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ঘটে।
শনিবার পঞ্চম দফার ভোটে বর্ধমানের রসিকপুর মসজিদতলা এলাকার একটি বুথে বিজেপি কর্মীদের খাবার দিতে যাওয়ায় সিদ্ধার্থ রায় নামে এক বিজেপি কর্মীকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তাকে ড্রেনেও ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। আর এই ঘটনায় পাল্টা বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা লক্ষ্মীপুর মাঠ এলাকার কয়েকটি বাড়ি ও স্থানীয় একটি ক্লাবে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ করা হয়। শনিবার রাতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
যদিও এলাকার বাসিন্দাদের দাবী, দু’পক্ষের মধ্যে বিষয়টি মিটমাটও হয়ে যায়। এদিকে এই ঘটনার পর এদিন দুপুরে বিজেপির জেলা কমিটির নেতা খোকন সেনের নেতৃত্বে একটি মিছিল মেহেদিবাগান এবং পাঞ্জাবীপাড়া পরিক্রমা করে। তা নিয়ে শুরু হয় প্রাথমিক চাঞ্চল্য। এর কিছুক্ষণ পরেই বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী খোকন দাস লক্ষ্মীপুর মাঠ এলাকায় ঢোকেন। খোকন দাসের সঙ্গে ইফতিকার আহমেদ, নুরুল আলমের নেতৃত্বে তৃণমূল কর্মীরা ছিলেন। এদিন তারা যে সমস্ত ক্লাব ও বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে সেগুলি খতিয়ে দেখেন।
এছাড়া পরিদর্শন সেরে ফেরার পথে হঠাৎই একদল তৃণমূল সমর্থক বিজেপি সমর্থকদের বাড়ির দিকে রে রে করে তেড়ে যান। বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর চেষ্টা করেন। এই সময় মহিলারা বাধা দিতে এলে তৃণমূল কর্মীরা কয়েকজন মহিলাকে চুলের মুঠি ধরে মারধর করার চেষ্টা করেন। ফলে এতেই আগুনে ঘি পড়ে। মূহূর্তের মধ্যে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। বিজেপি কর্মীরা একজোট হয়ে বিশেষত মহিলারা হাতে অস্ত্র সহ লাঠিসোটা নিয়ে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ভয়ে খোকন দাস সহ অন্যান্য নেতারা এলাকা ছেড়ে ছুটে পালান।
এই সময় উত্তেজিত বিজেপি সমর্থকদের হাতে এই এলাকারই বাসিন্দা প্রদীপ হাজরা ধরা পড়ে যান। তাকে রাস্তায় ফেলে বাঁশ এবং লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারা হয়। প্রদীপবাবুর মাথা ফেটে যায়। এরপরই পুলিশ কর্মীরা এলাকায় ঢোকেন। ইতিমধ্যে এই সংঘর্ষের খবর পেয়ে বাজেপ্রতাপপুর মাঠপাড়া এলাকা থেকে কয়েকশো তৃণমূল সমর্থক রেললাইন পেরিয়ে এসে পিছন থেকে বিজেপি কর্মীদের ওপর আক্রমণ চালাতে থাকে। যার ফলে ফের উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
অপরদিকে, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল প্রার্থী খোকন দাস বলেছেন, “বিজেপি নেতা খোকন সেনের নেতৃত্বে বিজেপি সমগ্র শহর জুড়ে সন্ত্রাস চালাচ্ছে। কখনো বোম মারছে তো কখনো ঘর-বাড়ি ভাঙচুর করছে। পুলিশ-প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েও কোনোরকম লাভ হচ্ছে না। পুলিশ-প্রশাসন বিজেপির কেনা গোলাম হয়ে গেছে”।
বিজেপি নেতা বিশ্বজিত সেন ওরফে খোকন সেন জানিয়েছেন, “খোকন দাসের নেতৃত্বে তৃণমূল সম্পূর্ণ শহর জুড়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। তারা এই ঘটনায় চুপ করে বসে থাকবেন না। এরকম হলে তাদের পক্ষ থেকেও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে”।