বিকল্প আয়ের দিশা দেখাচ্ছে কালিয়াগঞ্জের ফুল চাষীরা
অনুপ জয়সওয়ালঃ উত্তর দিনাজপুরঃ বিকল্প আয়ের পথে গাঁদাফুল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের মালগাঁ পঞ্চায়েতের রান্ধুনীপাড়া। ধান, গম ও ভুট্টার মতো দানাশস্য চাষের পাশাপাশি একফালি জমিতে গাঁদাফুল চাষ করছে এই গ্রামের অধিকাংশ কৃষক পরিবার। সারাবছর নিশ্চিত আয়ের কারণে এই গাঁদাফুল চাষে আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে কালিয়াগঞ্জের কৃষক মহলে। রান্ধুনীপাড়ার মতো কালিয়াগঞ্জের মালগাঁ এবং মোস্তফানগর পঞ্চায়েতের কুনোর সংলগ্ন বহু গ্রামের জমি এখন গাঁদাফুলে ভর্তি আছে। হিন্দু ধর্মের বারো মাসে তেরো পার্বণে ফুল চাই। বিয়ের মন্ডপসজ্জা থেকে গৃহদেবতার পূজো সবেতেই গাঁদাফুল চাই। তাই সারাবছর এই গাঁদাফুলের চাহিদা ব্যাপক। শীতের মরসুমে গাঁদাফুলের রমরমা হলেও বছরের বাকি সময় এই ফুলের যোগান দিয়ে থাকে কালিয়াগঞ্জের রান্ধুনীপাড়ার মতো অন্যান্য গ্রামের ফুলচাষে যুক্ত কৃষকেরা।
বস্তাবন্দি হয়ে বাসের মাথায় চেপে জেলাসদর রায়গঞ্জের মতো মালদা ও শিলিগুড়িতে কালিয়াগঞ্জের রান্ধুনীপাড়ার গাঁদাফুল পৌঁছে যাচ্ছে। এই গাঁদাফুল বিক্রি করে সংসারের অভাব পূরন করছে কালিয়াগঞ্জের রান্ধুনীপাড়ার কৃষকরা। বাড়ির মহিলারা সংসারের কাজকর্মের ফাঁকে ফুলচাষে সহযোগীতা করে থাকে।
বিষ্ণুপদ সরকার নামে এক ফুলচাষী জানান, “নিজের একবিঘা জমিতে গাঁদাফুল চাষ করেছি। মালদা এবং শিলিগুড়িতে মহাজনের চাহিদা মতো ফুল পাঠাই। শীতের এই সময় সর্বত্র গাঁদাফুল হয় বলে দাম নেমে আসে। কিন্তু বছরের বাকি সময় পাইকারি ১০০ টাকা কেজি পর্যন্ত দাম পাই। ১২ মাস এই গাঁদাফুল চাষ করে যে আয় হয় তা দিয়ে ভালোভাবে সংসার চালাই”।
আবার রান্ধুনীপাড়ার অপর ফুলচাষী নীলকমল সরকার বলেছেন, “এবারে ১০ কাটা জমিতে গাঁদাফুল চাষ করেছি। মালদা ও রায়গঞ্জে ফুল পাঠাই। শীতের তিনমাস এই গাঁদাফুলের কম দাম পাই। কিন্তু বাকি সময় এই গাঁদাফুলের ভালো দাম পাওয়া যায়। অন্যান্য চাষআবাদের সঙ্গে একফালি জমিতে এই গাঁদাফুল চাষ যথেষ্ট লাভজনক”।
মালগাঁ পঞ্চায়েতের এই রান্ধুনীপাড়ার প্রায় দেড়শো কৃষক পরিবার এই গাঁদাফুল চাষের সঙ্গে যুক্ত। ফুলচাষ লাভজনক হওয়াতে দিনেদিনে এই চাষের সংখ্যা বাড়ছে। রায়গঞ্জ, মালদা এবং শিলিগুড়িতে মহাজনের কাছে পাঠানোর পাশাপাশি কালিয়াগঞ্জ শহরের বাজারে এই গাঁদাফুল খুচরো বিক্রি করছে অনেক ফুলচাষী।