নিজস্ব সংবাদদাতাঃ উত্তরপ্রদেশঃ এসএসসি দুর্নীতি মামলায় শুক্রবার রাজ্যের প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী তথা বর্তমান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের আবাসনে ইডি তল্লাশি অভিযান চালিয়ে নগদ ২১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা, ৭৯ লক্ষ টাকার সোনার গহনা সহ ৫৪ লক্ষ টাকার বৈদেশিক মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে।
কিন্তু ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে উত্তরপ্রদেশের কানপুরের সুগন্ধি ব্যবসায়ী পীযূষ জৈনের বাড়িতে ডিজিজিআই (আমদাবাদের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব জিএসটি ইন্টেলিজেন্স) তল্লাশি চালিয়ে কয়েকশো কোটি টাকা উদ্ধার করেছে যা অর্পিতার আবাসন থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার তুলনায় কয়েকশো কোটি গুণ বেশী।
পীযূষের বাড়িতে অনেক টাকার সম্পত্তি লুকোনো আছে এই খবর পেয়েই ডিজিজিআই তার বাড়িতে হানা দেয়। এরপর ১২০ ঘণ্টা ধরে ম্যারাথন তল্লাশি ও ৫০ ঘণ্টা জেরার পর পীযূষকে গ্রেফতার করা হয়। পীযূষের বাড়ি থেকে নগদ ১৭৭ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া ২৩ কেজি সোনা এবং ৬০০ কেজি চন্দনকাঠের তেল উদ্ধার করা হয়। বাড়ি ছাড়াও তার কানপুর ও কনৌজের বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কে থাকা অ্যাকাউন্টেও বিপুল সম্পত্তির হদিশ পাওয়া যায়। কনৌজের কারখানা থেকে নগদ ১৭ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়।
অভিযান শেষে পীযূষের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নগদের পরিমাণ ১৯৫ কোটি। আর উদ্ধার হওয়া মোট সম্পত্তির পরিমাণ কমপক্ষে ২৮৪ কোটি টাকা ছিল। পরে দুবাইয়েও দু’টি সম্পত্তির হদিশ পাওয়া যায়। এদিকে পীযূষের বিরুদ্ধে মোট ৩১ কোটি টাকা আয়কর ফাঁকি দেওয়া এবং ভুয়ো বিল বানিয়ে জিনিস পাঠানোর অভিযোগ উঠেছিল।
সে জেরায় স্বীকার করে নেন, ‘‘বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নগদ জিএসটি ছাড়া পণ্য বিক্রি করে আয় করা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পীযূষ এই বিপুল সম্পত্তির মালিক হলেও সাধারণের মতোই থাকতেন। পুরনো একটা স্কুটারে করে ঘোরাফেরা করতেন। দু’টি গাড়ি থাকলেও খুব একটা ব্যবহার করতেন না। সচরাচর কোনো অনুষ্ঠানে যেতেন না। গেলেও পাজামা ও ফতুয়া পরতেন।’’
পীযূষের বাবা মহেশচন্দ্র জৈন পেশায় রসায়নবিদ ছিলেন। মহেশচন্দ্রবাবুর কাছ থেকেই পীযূষ এবং তার ভাই অম্বরীশ সুগন্ধি তৈরীর পদ্ধতি শিখেছিলেন। কিন্তু মাত্র ১৫ বছরেই কানপুর থেকে দেশের বিভিন্নপ্রান্তে সুগন্ধির ব্যবসাকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।
তদন্তকারীরা তল্লাশি চালিয়ে জানতে পারেন, পীযূষের চারটি বাড়ি আছে। এর মধ্য একটি চিপাইতি গ্রামে ও বাকি তিনটি কনৌজোর বিভিন্ন প্রান্তে। চিপাইতির বাড়িটা এমন ভাবে তৈরী করা হয়েছিল যাতে আশপাশের বাড়ি থেকে ভিতরের কিছু দেখা না যায়। বর্তমানে তিনি বিচার বিভাগীয় হেফাজতে আছেন।