বড়বাজারের হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৪ জন

Share

অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ কলকাতার বড়বাজারের মেছুয়ার ফলপট্টির হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১৪ জন হয়েছে। মৃতদের মধ্যে দু’জন শিশু, এক জন মহিলা ও এগারো জন পুরুষ আছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, চোদ্দ জনের মধ্যে জনের আট জনের দেহ শনাক্ত করা হয়েছে। বাকিদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। কার্যত প্রচণ্ড কালো ধোঁয়ায় শ্বাসরোধ হয়েই মর্মান্তিক ভাবে তেরো জনের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এক জনের কার্নিশ থেকে ঝাঁপ মেরে মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আহতের সংখ্যা ১৩ জন। এদের মধ্যে বারো জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর এক জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা জানান, ‘‘আগুন লাগলো কিভাবে? আর হোটেলে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা থাকলেও কাজ করেনি কেন? তা খতিয়ে দেখার জন্য ইতিমধ্যে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছে। তদন্তপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আজ ফরেন্সিক দলের ঘটনাস্থলে আসার কথাও রয়েছে। তারা পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবে। কোনো গাফিলতি ছিল কিনা? আবাসিকদের বার করা গেল না কেন? সব কিছু তদন্ত করে দেখা হবে।’’


প্রসঙ্গত, হোটেলটি সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ও বিধান সরণীর সংযোগকারীতে অবস্থিত। গতকাল ছ’তলার ওই হোটেলের দোতলায় আগুন লেগেছিল। পরে আগুন অন্য তলেও ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকাণ্ডের সময় হোটেলের ৪২টি ঘরে ৮৮ জন ছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকে ভিন্ রাজ্যেরও বাসিন্দা ছিলেন। ভয়াবহ ওই আগুন থেকে বাঁচতে একেবারে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। বহু মানুষ ছাদে-কার্নিশে দাঁড়িয়ে বাঁচানোর আর্জি জানাতে থাকেন। আর যে হোটেলে আগুন লেগেছে তার আশপাশে প্রচুর বাড়ি এবং দোকান থাকায় সেখানেও দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল।


কিন্তু তার আগেই দমকল বিভাগের কর্মীরা দমকলের দশটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যান। প্রায় আট ঘণ্টার চেষ্টায় এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এদিকে আনন্দ পাসোয়ান নামে এক জন ব্যক্তি আগুন থেকে বাঁচতে হোটেলের কার্নিশ থেকে নীচে ঝাঁপ দেন। এরপর আনন্দ পাসোয়ানকে আহত অবস্থায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। আর প্রবল ধোঁয়ার জেরে হোটেলটি গ্যাসচেম্বারে পরিণত হওয়ায় দমকল কর্মীরা সহজে হোটেলের ভিতরে ঢুকতে পারছিলেন না।


যদিও তারা মই দিয়ে চার তলার ও পাঁচ তলার ঘরের জানলা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে একে একে হোটেলের আবাসিকদের উদ্ধার করেন। এছাড়া আতঙ্কিত হয়ে বেশ কয়েক জন হোটেলের কার্নিশে চলে আসায় দমকল কর্মীদের মই দিয়ে তাদেরকে নামানো হয়। এদিনও উদ্ধারকাজ চলছে। এদিন ভোর ৩টে অবধি ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা সহ রাজ্যের নারী এবং শিশু কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী শশী পাঁজা ঘটনাস্থলে ছিলেন।

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930