দশম শ্রেণীর ছাত্রী স্টাইপেন্ডের জমানো অর্থ তুলে দিলো রেড ভলেন্টিয়ারের হাতে
স্নেহাশীষ মুখার্জিঃ নদীয়াঃ নদীয়ার কৃষ্ণনগর চুনারিপাড়ার বাসিন্দা পরেশ দত্ত ছাত্র অবস্থা থেকেই বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। স্ত্রী বনানী কুন্ডু বর্ধমানের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। তাদের একমাত্র মেয়ে পূরবী ২০০৫ সালে জন্মানোর তিন দিন বাদেই সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত হয়।
এরপর থেকে নিয়মিত চিকিৎসা চলে। পুরবী কৃষ্ণনগর রাষ্ট্রীয় বিদ্যালয়ের ছাত্রী। যখন অন্যান্য বন্ধুবান্ধবরা দৌড়ে বেড়াতো তখন সে গাছের সাথে বন্ধুত্ব করতো, পাখিদের সাথে কথা বলতো। আর সেই বন্ধুত্ব কবিতায় রূপ নিত। এখন অবশ্য ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে কবি হিসাবে পুরবীর পরিচিতির পরিধি অনেকটাই বেড়েছে।
পুরবী জানায়, “সোশ্যাল মিডিয়ায় রেড ভলেন্টিয়ারদের কর্মকান্ড দেখে মনে হতো রেড ভলেন্টিয়ারদের সাথে সহযোগীতা করি। কিন্তু শারীরিক কারণে উপায় না থাকলেও পড়াশোনা করার স্টাইপেন্ডের অর্থ সঞ্চিত ছিল। এই সময় এই টাকা সাধারণ মানুষের সমস্যার কিছুটা সমাধানে লাগানোর দরকার বলে মনে করেছি”।
বাবা পরেশ দত্ত আক্ষেপের সুরে বলেন, “কবিতার জন্য সকলে সুখ্যাতি করলেও, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে দূষণ সংক্রান্ত ব্যাপারে ওর একটি কবিতা নিজেদের আগ্রহেই নিয়েছিল তবে তারপরে ওকে অনুপ্রেরণা দেওয়া বা উৎসাহিত করার কোনো প্রয়াস লক্ষ্য করা যায়নি! হয়তো আমার রাজনৈতিক কারণে”।
মা বনানী কুন্ডু জানান, “৩ দিন আগে রাতে শুয়ে ঘুমানোর সময় যখন আমায় প্রথম জানালো ওর সহযোগীতার ইচ্ছার কথা, নিজের মেয়ে বলে নয় ওর অনুভূতি ও সহযোগীতার মানসিকতার জন্য গর্ব হচ্ছিলো। আমরা মা-বাবা হিসাবে বরাবরই চেয়েছি যাতে মেয়ে বড়ো মনের মানুষ হোক”।
রেড ভলেন্টিয়ার দাদা-দিদিরা পূরবীকে রেড স্যালুট জানিয়ে বলেছে, “আমাদের দায়িত্ব আরো বাড়িয়ে দিলো। আজ থেকে কাজের গতি বাড়বে আরো বাড়বে”।