নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মহারাষ্ট্রঃ গতকাল রাত প্রায় ২ টো নাগাদ মহারাষ্ট্রের ভাণ্ডারা ডিস্ট্রিক্ট জেনারেল হাসপাতালে ভয়াবহ আগুন লেগে মৃত্যু হলো ১০ জন সদ্যোজাতের। ঘটনা্র জেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সহ সেখানকার অন্যান্য রোগীরাও আতঙ্কিত তয়ে পড়েন।
মুম্বই থেকে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার দূরের এই হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় যে, সদ্যোজাত শিশুদের সুস্থ রাখার জন্য সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়। মধ্যরাতে একজন নার্স সেই ওয়ার্ড থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে খবর দেওয়া মাত্র তারা দমকলে খবর দিয়ে নিজেরাই অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্রের মাধ্যমে আগুন আয়ত্তে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু দমকলবাহিনী পৌঁছানোর আগেই সেই লেলিহান শিখার দাপটে প্রাণ হারিয়েছে ১ থেকে ৩ মাস বয়সী ১০ জন সদ্যোজাতক।
এই হাসপাতালের চিকিৎসক প্রমোদ খান্দাতের অত্যন্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে প্রায় ৭ জন শিশু প্রাণে রক্ষা পেয়েছে। উদ্ধার করা শিশুদের হাসপাতালের অন্য ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে লেবার ওয়ার্ড, আইসিইউ ওয়ার্ড ও ডায়ালিসিস ওয়ার্ডের রোগীদের অন্য ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পরে দমকলবাহিনীর তৎপরতায় ভয়ংকর আগুনকে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে উপস্থিত হয়। কিন্তু এই আগুন কিভাবে লাগল তার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান শক সার্কিট থেকেই এই আগুন লেগেছে। এই বিষয়ে পুলিশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সহ চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে। এই মর্মান্তিক ঘটনার শোকের ছায়া নেমে এসেছে মৃত শিশুদের পরিবারে। এই ঘটনায় মৃত শিশুদের পরিবার এই সরকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন।
ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপে এবং ভান্ডারা জেলা কালেক্টের এবং এসপির সাথে আলোচনা করে গোটা বিষয়টি ভালোভাবে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।
এমনকি এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ টুইট করে শোক প্রকাশ করেছেন।
রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ টুইটের মাধ্যমে জানান, “আমি মহারাষ্ট্রের ভান্ডারায় অগ্নিকাণ্ডের ফলে সদ্যোজাত শিশুদের অকালমৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। এই হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনায় যারা নিজেদের সন্তান হারিয়েছেন, তাদের সমবেদনা জানাচ্ছি”।
রাহুল গাঁধিও টুইটের মাধ্যমে জানিয়েছেন, “মহারাষ্ট্রের ভাণ্ডারা ডিসট্রিক্ট জেনারেল হাসপাতালের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। যে পরিবারগুলো তাদের শিশুদের হারালেন তাদের প্রতি সমবেদনা রইল। মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে আবেদন করব ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে”।