মিনাক্ষী দাসঃ ওজন কমাতে সবাই চায়। কিন্তু ডায়েটের তালিকায় কী রাখবেন তাই নিয়ে দ্বন্দ্বের অন্ত নেই। আর তা যদি হয় ভাত ও রুটি নিয়ে তবে তো বলাই বাহুল্য সেক্ষেত্রে নানা মুনির নানা মত।
পুষ্টিবিদরা অনেক ক্ষেত্রে ভাত আবার অনেক ক্ষেত্রে রুটিকে প্রাধান্যতা দেয়। খাবারের গুণ বিচার করতে গেলে ভাতের তুলনায় রুটি বেশি উপকারী। কারণ রুটিতে আছে অনেক বেশি ক্যালোরি। আধ ছটাক চাল থেকে ১০২.১ ক্যালোরি পাওয়া যায় কিন্তু রান্নার পর ভাত হলে এই ক্যালোরি কমে দাঁড়ায় ৫৬.৭ ক্যালোরি। আর আধ ছটাক আটা থেকে ৯৬.৪ ক্যালোরি পাওয়া যায় তবে রুটি হলে ক্যালোরির পরিমাণ বেড়ে হয় ১০১.২ ক্যালোরি।
আবার ধবধবে সাদা চালের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেশি। কিন্তু বেশি ছাঁটা ও পালিশ চালে ভিটামিন কম থাকে। এমনকি ভাতের ফ্যান ফেলে দিলে সেই ভাত থেকে প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ লবণ বাদ পড়ে যায়। ঠিক তেমনই আটার ক্ষেত্রেও যখন আটা চালা হয় তখন তুষ বাদ পড়লে তার থেকে থায়ামিন বেরিয়ে যায়।
Sponsored Ads
Display Your Ads Hereপুষ্টিবিদরা বলেছেন, প্রতি ১০০ গ্রাম মেশিনে ছাঁটা চালে ফ্যাট ০.৪ গ্রাম, প্রোটিন ৬.৪ গ্রাম, এনার্জি ৩৪৫ কিলোক্যালোরি, আয়রন ০.৮ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ৩.৮ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১৩৬ মিলিগ্রাম, ক্যালশিয়াম ২৪ মিলিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৭৯.০ গ্রাম, ভিটামিন B1 ০.২১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন B2 ০.০৯ মিলিগ্রাম আছে। বিশেষত সিদ্ধ চালে থায়ামিন ও খনিজ পদার্থের পরিমাণ বেশি থাকায় সিদ্ধ চাল আতপ চালের থেকে বেশি গুণসম্পন্ন ও উপকারী।
আর প্রতি ১০০ গ্রাম গমের আটায় ফ্যাট ১.৭ গ্রাম, প্রোটিন ১২.১ গ্রাম, এনার্জি ৩৪১ কিলোক্যালোরি, আয়রন ৩.৩ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.৩ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৩৭২ মিলিগ্রাম, ক্যালশিয়াম ৪১ মিলিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৬৯.৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন B1 ০.৫৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন B2 ০.১২ মিলিগ্রাম আছে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Hereএছাড়াও ভাতে জল দিয়ে রাখলে বা পান্তা ভাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স আছে। তবে এই ভাতকে জল সহ খেলে তবেই এর গুণাগুণ আমাদের শরীরে পৌঁছাবে। আর রুটি করার সময়ও বেশি জলে আটা মেখে কিছুক্ষণ রেখে দিয়ে রুটি করলে তাতেও ভিটমিন বি কমপ্লেক্স তৈরি হয়। আবার মাখা আটার লেচি রেখে দিয়ে পরদিনের আটার সাথে মিশিয়ে রুটি করলে তাতে আরো ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যুক্ত হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে খাদ্যের গুণাগুণ অনুযায়ী ভাত ও রুটি উভয় আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। কিন্তু নির্দিষ্ট পরিমাণ অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ করলে তা শরীরের পক্ষে স্বাস্থ্যকর এমনকি ওজনও বৃদ্ধি করে না এবং মেদ জমার হাত থেকেও রক্ষা করে।