চয়ন রায়ঃ অবশেষে সমস্ত জল্পনা মুছে ফেলে আজ মেদিনীপুর কলেজ ময়দানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র অমিত শাহের জনসভায় আনুষ্ঠানিক ভাবে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দিলেন। তাঁকে সঙ্গে নিয়েই মঞ্চে ওঠেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি মঞ্চে শুভেন্দুর হাতে পতাকা তুলে দেন তাঁদের সাথে দিলীপ ঘোষও ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত রয়েছেন অর্জুন সিংহ, ভারতী ঘোষ, মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং লকেট চট্টোপাধ্যায় সহ এক ঝাঁক নেতা।
শুভেন্দু ছাড়াও রাজ্যের শাসক দল এবং বিরোধী শিবিরের একাধিক নেতা বিজেপিতে যোগদান করলেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন গড়বেতা ৩ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আকাশ দীপ সিনহা, তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক স্নেহাশিস ভৌমিক, জেলা পরিষদ অধ্যক্ষ তপন দত্ত, মেদিনীপুর পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রণব বসু, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি, রমা প্রসাদ গিরি এবং কিষান ক্ষেত মজুর সংঘের জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু, প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ কাবেরী চট্টোপাধ্যায় সহ প্রমুখ।
প্রথম মুকুল রায়ের বক্তব্য দিয়েই শুরু হয়। বক্তব্যে তিনি জানিয়েছেন, “এক সময় তাঁর বহু আন্দোলনের সঙ্গী শুভেন্দু অধিকারী আজ এই মঞ্চে রয়েছেন। ২০০৯ সালে তিনি এখানকার মঞ্চে দাঁড়িয়ে পরিবর্তনের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতই চেঁচান, ভোটে তৃণমূল ৩ অঙ্কে পৌঁছবে না যা শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। এমনকি তাঁর অভিযোগ শুভেন্দুকে নখদাঁত বের করে আক্রমণ করবে তৃণমূল।শুভেন্দু গণ আন্দোলন করে উঠে আসা নেতা লড়াইয়ের এই ময়দানে নতুন ক্ষেত্র পাবে। আগামী দিনে যে ঝড় উঠবে তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরে যেতে হবে”।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
শুভেন্দু অধিকারী তাঁর বক্তব্যের প্রথমেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে বড়ভাই বলে সম্বোধন জানান। তারপরই বলেন, “এই ঐতিহাসিক ময়দান অনেক ঘটনার সাক্ষী, উত্তরপ্রদেশে বিশাল জয়ের পর দিল্লিতে তাঁর সঙ্গে অমিত শাহের সাক্ষাত্ হয়। তিনি কখনোই তাঁকে বিজেপিতে যোগ দিতে বলেননি। যখন করোনা আক্রান্ত হয়েছিল তখন দলের কেউ খোঁজ নেয়নি। অথচ তাদের জন্যই কাজ করেছি। কিন্তু তখন অমিত শাহ তাঁর খোঁজ নিয়েছিলেন।
Sponsored Ads
Display Your Ads Hereতিনি এও বলেছেন, অনেকে বলছেন সে মায়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। কিন্তু তাঁর মা গায়ত্রী দেবী আর তাঁর দেশ। আর কেউ তাঁর মা নয়।
তিনি মনেপ্রাণে চান কলকাতা এবং দিল্লিতে এক সরকার থাকুক। মোদীর হাতে বাংলাকে না তুলে দিলে রাজ্যের সর্বনাশ হবে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Hereএদিন মঞ্চ থেকে তোলাবাজ ভাইপো হঠাও বলে শ্লোগানও তোলেন শুভেন্দু”।
দিলীপ ঘোষের বলেছেন, মেদিনীপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বক্তৃতা দিতে এসেছিলেন তখন মঞ্চ ভিড়ের চাপে ভেঙে গিয়েছিল কিন্তু আজকের বিজেপি ভেঙে পড়ার মতো নয়। আজ অন্য জায়গা থেকে ভেঙে বিজেপিতে আসছে।
ভারতী ঘোষের বক্তব্য, “মরা তৃণমূলকে নিয়ে কী করবো। বলো হরি হরি বোল, তৃণমূলকে খাটে তোল”।
রাহুল সিংহের বক্তব্য, “বাংলার সংস্কৃতি যদি কেউ ফিরিয়ে আনতে পারে তা হলে বিজেপিই পারবে। মানুষ বলছেন ঠিকঠাক ভোট দিতে পারলে তৃণমূল উত্খাত হয়ে যাবে। যে সব কেন্দ্রে ভালোভাবে ভোট হয়েছে সেখানে বিজেপি জিতবে।জেপি নাড্ডার গাড়িতে পাথর ছুড়েছে, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার অথর্ব নয় দেখিয়ে দিয়েছে কিভাবে আইপিএস অফিসারদের কান ধরে বদলি করতে হয়। পুলিশের মধ্যে ভয় শুরু হয়ে গিয়েছে। পুলিশকে বলব নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করুন। তৃণমূলের হয়ে কাজ করবেন না। বিজেপির একমাত্র লক্ষ্য রাজ্যে শান্তি আনা। পুরুলিয়া, উত্তর দিনাজপুরে বিজেপি কর্মীদের খুন করা হয়েছে মিথ্যে মামলায় বিজেপি কর্মীদের ফাঁসানো হচ্ছে। যে সব পুলিশ, সরকারী কর্মচারী তৃণমূলকে সমর্থন করছেন তাঁদের নাম লেখা চলছে।এই রাজ্যে টাকা চুরি করে ফেরত দিলেই ক্ষমা কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর হল না কেন? প্রশ্ন রাহুলের”।
শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিরোধী আসনে দেখতে চায়”।