মিনাক্ষী দাসঃ সাবুদানা এমন এক আহার যা বেশীরভাগ উপবাসের পর খাওয়ার চল আছে। তবে শীতের সন্ধ্যা মানেই বাঙালীর পাতে চাই মন ভালো করা উষ্ণতার ছোঁয়া। আর সেই উষ্ণতার সাথে যদি জিভে জল আনা মিষ্টি স্বাদ যোগ হয়, তবে কথাই নেই। ঠিক এমনই এক ডেজার্ট হল সাবুদানার পায়েস। সাবুদানা মূলত ট্যাপিওকা গাছের মূল থেকে প্রস্তুত শ্বেতসারসমৃদ্ধ খাদ্য। এটি হজমে সহজ এবং শরীরকে দ্রুত শক্তি জোগায়। যদিও উপবাসের দিনেই সাবুদানা খাওয়ার চল বেশি, তবে বর্তমানে এর স্বাদ ও পুষ্টিগুণের জন্য এটি দৈনন্দিন ডেজার্ট হিসেবেও সমান জনপ্রিয়। তাই খুব কম সময়ে, হাতের কাছে থাকা সাধারণ উপকরণ দিয়েই অনায়াসে সাবুদানা পায়েস তৈরী করা যায়।

উপকরণঃ ১/২ কাপ ছোটো সাবুদানা, ১ লিটার দুধ, ৩-৪ কাপ চিনি, ১ টেবিল চামচ কিশমিশ, ১ টেবিল চামচ কুচি করা কাজু বাদাম, ১ টেবিল চামচ পেস্তা বাদাম, ১/২ চা চামচ এলাচ গুঁড়ো, এক চিমটি জাফরান, ১ চা চামচ ঘি ও সামান্য জল।
প্রণালীঃ প্রথমে সাবুদানা ভালো করে ২–৩ বার জল দিয়ে ধুয়ে নিন, যতক্ষণ না জল পরিষ্কার হয়। এরপর ১/২ কাপ জলে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। সাবুদানা ফুলে দ্বিগুণ হয়ে গেলে জল ঝরিয়ে একপাশে রাখুন। একটি পাত্রে দুধ নিয়ে মাঝারি আঁচে ফোটাতে দিন। দুধ ফুটে উঠলে আঁচ কমিয়ে মাঝে মাঝে নেড়ে দিন, যাতে দুধ তলায় লেগে না যায়। দুধ সামান্য ঘন হলে তাতে ভেজানো সাবুদানা যোগ করুন। ভালো করে মিশিয়ে সাবুদানা স্বচ্ছ হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন। এই ধাপটি সাধারণত ১৫–২০ মিনিট সময় নেয়।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
এরপর চিনি ও এলাচ গুঁড়ো যোগ করে নেড়ে দিন। চিনি গলে গেলে চাইলে সামান্য গরম দুধে ভেজানো জাফরান মিশিয়ে নিতে পারেন। অন্যদিকে ছোট প্যানে ঘি গরম করে কাজু ও কিশমিশ হালকা ভেজে পায়েসে যোগ করুন। সব উপকরণ ভালভাবে মেশানোর পর আরও ৫–১০ মিনিট অল্প আঁচে রান্না করুন। মনে রাখবেন, ঠান্ডা হলে পায়েস আরও ঘন হয়, তাই একটু পাতলা রাখাই ভালো। তৈরি হয়ে গেলে আঁচ বন্ধ করুন। গরম বা ঠান্ডা- দু’ভাবেই পরিবেশন করা যায়। উপর থেকে পেস্তা কুচি ছড়িয়ে দিলে দেখতে ও স্বাদে দু’দিকেই জমে যায়।

সাবুদানার পায়েস শুধু সুস্বাদু নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর। ১০০ গ্রাম সাবুদানায় প্রায় ৩৩২ ক্যালোরি ও ৮৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা শরীরকে দ্রুত শক্তি দেয়। সহজপাচ্য হওয়ায় অসুস্থ ব্যক্তি ও শিশুদের জন্য এটি আদর্শ। সাবুদানায় ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে এবং পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। গর্ভাবস্থায় এতে থাকা ভিটামিন বি৬ ও ফোলেট ভ্রূণের বিকাশে উপকারী। দুধ ও বাদাম যোগ হওয়ায় পায়েসের সামগ্রিক পুষ্টিমান আরও বেড়ে যায়। যারা ওজন বাড়াতে চান বা বেশি ক্যালোরি দরকার, তাদের জন্যও এটি ভালো বিকল্প।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here









