নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মুর্শিদাবাদঃ পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে আজ মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজে রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে ওই হাসপাতালে কর্মবিরতি চলছে। এদিন সাপের কামড়ে আহত রোগীকে নিয়ে আসা হয়েছিল। বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় ভর্তিও করানো হয়। কিন্তু ভর্তির তিন ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হয়। মৃতের নাম বিদ্যাসাগর সরকার। বয়স ৩২ বছর। বাড়ি বহরমপুর থানার চরমহুলায়।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ ভোরবেলা ঘুমন্ত বিদ্যাসাগরকে সাপে কামড়ায়। এরপর আধ ঘণ্টার মধ্যে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু হাসপাতালে তাকে দু’টি ইনঞ্জেকশন দিয়ে বিছানায় হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখা হয়েছিল। ধীরে ধীরে শরীর নীল হতে শুরু করেছিল। আর নার্সদের কথাটি বলায় ধমক দেয়। এরপর কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই রোগীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। বিদ্যাসাগরের স্ত্রী সুভদ্রা সরকারের অভিযোগ, ‘‘সাপে কাটা বহু রোগী সঠিক চিকিৎসা পেয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে এসেছেন। চিকিৎসা হলে আমার স্বামীকেও বাঁচানো যেত।’’
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেন। পাশাপাশি, গোড়াবাজারের সংলগ্ন শেখপাড়া থেকে এক অন্তঃসত্ত্বাকে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকদের তরফেও নাকি জানিয়ে দেওয়া হয় যে, ‘‘চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলায় রোগীকে আপাতত জরুরী বিভাগে ভর্তি করানো যেতে পারে। শুধুমাত্র সেখানকার পরিষেবাই সচল রয়েছে। এতে ওই মহিলার পরিবারের সদস্যরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।’’
ওই মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অমিত দাঁ দু’টি ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘কোনো রোগী অনেকটা সময় নষ্ট করার পর মেডিকেল কলেজে এসে পৌঁছালে চিকিৎসার সুযোগ খুব বেশী থাকে না। আর রোগীর মৃত্যুর পিছনে এখনো অবধি চিকিৎসক গাফিলতির কোনো অভিযোগ পাইনি।’’ উল্লেখ্য, এদিন মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায়। প্রথমে আউটডোরে রোগীদের চিকিৎসার জন্য টিকিট দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু প্রায় দু’শো টিকিট দেওয়ার পর আচমকা জুনিয়র চিকিৎসক এসে কাউন্টার বন্ধ করে দিতে বললে কাউন্টার বন্ধ হয়ে যায়। এই নিয়ে হাসপাতাল চত্বর সাময়িক ভাবে উত্তপ্ত হয়।