চয়ন রায়ঃ কলকাতাঃ সাত বছর চাকরী করার পর পরীক্ষা দিতে হবে কেন? এই প্রশ্ন তুলে এসএসএসির (স্কুল সার্ভিস কমিশন) চাকরীহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকারা আন্দোলন করছেন। আজ চাকরীহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ধুন্ধুমার কাণ্ড চলে। পুলিশী ধরপাকড় চলে। ‘অর্ধনগ্ন’ হওয়া চাকরীহারাদের নবান্ন অভিযান আটকে দেওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নও তোলেন। আন্দোলনকারীদের দাবী, ‘‘পুলিশ বেছে বেছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গ্রেফতার করেছে।’’
শুক্রবার থেকেই চাকরীহারারা নিজেদের অবস্থান বিকাশ ভবনের সামনে থেকে সরিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশমতো সেন্ট্রাল পার্কে অবস্থান শুরু করলেন। আজ এসএসসি সরকারী বিদ্যালয়ে নবম-দশম শ্রেণী ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর জন্য সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এর আগে নয়া বিধি প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, প্রার্থীদের শিক্ষকতার পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং ক্লাস নেওয়ার দক্ষতার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। এরপর চাকরীহারারা ওই বিজ্ঞপ্তি এবং বিধিপ্রকাশ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন যে, এক চাকরির জন্য দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেব কেন? মাত্র দু’মাসের মধ্যে প্রস্তুতি সম্ভব কিভাবে?
এককথায় ‘দ্বিচারিতা’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন। মূলত এদিন চাকরীহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ নিজেদের দাবীদাওয়া নিয়ে সরকারের উপর চাপ বৃদ্ধি করতে শিয়ালদহ থেকে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন। সেইমতো সকালবেলা থেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় জমায়েত শুরু হয়েছিল। তবে মিছিল শুরুর আগেই পুলিশ আটকে দিতেই ধস্তাধস্তি শুরু হয়। বেশ কয়েক জনকে আটক করে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। শিয়ালদহের পাশাপাশি, ধর্মতলা, সল্টলেক থেকেও গ্রেফতার করা হয়।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
চাকরীহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানান, ‘‘মেরে ফেলুক, গুলি চালাক।” “সরকারের দুর্নীতির কারণে আজ আমরা চাকরীহারা হতে বাধ্য হয়েছি। এই সরকারকেই আমাদের পোশাক ফিরিয়ে দিতে হবে। কিভাবে দেবেন সেটা ওনাদের ব্যাপার। আমরা সমাজে বের হতে পারছি না। বিভিন্ন লোকে বিভিন্ন প্রশ্ন করছে। তার উত্তর দেওয়া আর এখানে উলঙ্গ হয়ে থাকা একই ব্যাপার।”
আন্দোলনকারীদের অন্যতম মুখ মেহবুব মণ্ডল এই প্রসঙ্গে জানান, ‘‘আমাদের ঘোষিত কর্মসূচী ছিল। পুলিশকে বিষয়টি মেল করে জানানো হয়। কিন্তু তারপরেও আমাদের খুঁজে খুঁজে বার করে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রায় দেড়শো জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’ এদিনের এই ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার চাকরীহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা নতুন কর্মসূচীর ঘোষণাও করে বলেন, ‘‘আগামী রবিবার শুধু কলকাতা নয়, রাজ্য জুড়ে নাগরিক সমাজকে সাথে নিয়ে ধিক্কার দিবস মিছিল পালন করা হবে।’’ আর যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের নিশর্ত মুক্তির দাবীও জানানো হয়েছে। তবে যদি ছাড়া না হয়, তবে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারী দিয়েছেন।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here