ব্যুরো নিউজঃ আফ্রিকাঃ পূর্ব আফ্রিকার কেনিয়া দেশে সবুজে ভরা ছোট্ট একটি গ্রাম উমেজা। যার অর্থ ঐক্য। এই গ্রাম রাজধানী নাইরোবি থেকে মাত্র ছ’ঘণ্টা দূরে অবস্থিত। একসময় পুরুষদের অত্যাচার সহ্য সহ্য করতে বাধ্য হয়ে পুরুষদের হঠিয়ে গড়ে উঠেছিল মহিলাতান্ত্রিক এই গ্রাম।
একটা সময় ব্রিটিশ সেনারা এই গ্রামের মহিলাদের উপর নির্যাতন চালাতেন। নিজেদের ইচ্ছামতো ব্যবহার করতেন। যখন তখন মহিলাদের তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করতেন। এমনকি একসাথে প্রায় দেড় হাজার মহিলা ধর্ষিতা হয়েছিলেন। ওই সময় স্বামীদেরও পাশে পাননি। বরঞ্চ স্বামীরা ওই মহিলাদের গৃহহীন করে দিয়েছিলেন।
এর জেরে পুরুষদের প্রতি ঘৃণা থেকে ১৯৯০ সালে রেবেকা ললোসলি নামে এক জন নির্যাতিতা মহিলা বিতাড়িত আরো কয়েকজন মহিলাদের নিয়ে এই পুরুষমুক্ত গ্রাম গড়ে তুলেছিলেন। মূলত এই গ্রামে নির্যাতিতা মহিলাদের আশ্রয় দেওয়া হয়। এখানে দীর্ঘ ৩০ বছর থেকে কোনো পুরুষের প্রবেশ নেই।
কিন্তু অবিশ্বাস্য বিষয় এই যে, পুরুষদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেওে এই গ্রামের মহিলারা গর্ভবতী হয়ে পড়ছেন। তবে জানা যাচ্ছে যে, পুরুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ হলেও রাতের বেলায় বহু পুরুষ চুপিসারে এই গ্রামে ঢোকেন। আর মহিলারা তাদের মধ্যে থেকে নিজেদের পছন্দের মানুষের সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন।
যদিও ওই মহিলারা গর্ভবতী হয়ে পড়ার পর ওই পুরুষের সাথে আর কোনোরকম সম্পর্ক বা যোগাযোগ রাখেন না। মহিলারা নিজেরাই নিজেদের সন্তানদের জন্ম দিয়ে লালনপালন করে বড়ো করে তোলেন। পর্যটনের পাশাপাশি চাষবাস, কুটিরশিল্পের মাধ্যমে জীবিকা উপার্জন করেন। এছাড়া অনেকে নারীদের অধিকার রক্ষা সহ বহু সামাজিক কাজে নিযুক্ত রয়েছেন।
ওই মহিলারা নিজেদের জমি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখেছেন। আর ঘাস, মাটি এবং গোবর দিয়ে ছোটো ছোটো ঘর তৈরী করে থাকেন। এমনকি এই গ্রামে শিশুদের পড়াশোনার জন্য একটি বিদ্যালয়ও রয়েছে। উল্লেখ্য যে, শেষ ২০১৫ সালে জনসংখ্যা গণনা অনুযায়ী, ওই গ্রামে ৪৭ জন নারী ও প্রায় দু’শ জন শিশু ছিল।