ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে জোর ধাক্কা খেতে চলেছে রাজ্য

Share

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ নয়া দিল্লিঃ এই মুহূর্তে শিরোনামে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২৭ শে আগস্ট আমেরিকার সময় রাত ১২টা বেজে ১ মিনিট অর্থাৎ ভারতীয় সময় সকালবেলা ৯টা ১ মিনিট থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উপর পঞ্চাশ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছেন। কারণ ভারত রাশিয়ান তেলের অন্যতম বড়ো ক্রেতা হওয়ায় ট্রাম্পের রোষের মুখে পড়েছে। এর জেরর ভারতের একাধিক সেক্টরে প্রভাব পড়তে পারে। এর মধ্যে বস্ত্রবয়ন ও পোশাক শিল্প সবচেয়ে বড়ো সেক্টর। এ ছাড়াও জেম অ্যান্ড জুয়েলারি, সি ফুড, কার্পেট ও ফার্নিচার, চামড়া ও জুতো, রাসায়নিক ও চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত সেক্টর সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।

দেশের একাধিক সেক্টর চাপে পড়লে সেই চাপের প্রভাব আসবে বাংলার দিকেও। কারণ, বস্ত্রবয়ন ও পোশাক শিল্পের সঙ্গে ওতপ্রোত জড়িয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নাম। এ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৬ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ গোটা দেশের জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি সেক্টরে কাজ করে। যদি এই সেক্টরে প্রভাব পড়ে, হয়তো কর্মহীন হতে পারেন এঁদের মধ্যে অনেকেই। হিসাব বলছে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে আমেরিকাকে ভারত ৮৬.৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে। আর এর মধ্যে যে সব সেক্টরে কর বসতে পারে, সেই সেক্টরের প্রায় ৬০.২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করেছিল।

যদিও বস্ত্রবয়ন ও পোশাক শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় তুলো রফতানি করে বাংলা। এই রাজ্য থেকে তুলো রফতানি হয় বাংলাদেশে। আর বাংলাদেশের উপরও কর বসিয়েছেন ট্রাম্প। আর এতে ধাক্কা খেয়েছে সে দেশের বস্ত্রবয়ন শিল্প। আর, সেই ধাক্কা ঘুরে এসে লেগেছে এই বাংলার তুলো রফতানিতেও। যদিও এর মধ্যে আশার আলো দেখছেন অর্থনীতিবিদ সুপর্ণ পাঠক। তিনি বলছেন, যে কোয়ালিটির পোশাক ভারতে তৈরি করে তা আমেরিকায় রফতানি করা হয় সেই কোয়ালিটির পোশাক ভারতের বাজারে পাওয়া যায় না।


এমন নয় যে ভারতে সেই ধরণের বা সেই দামের পোশাক কেনার ক্রেতা নেই। ভারতের বর্তমান মধ্যবিত্ত শ্রেণি কিন্তু ওই পণ্য কিনতে সক্ষম। যদিও ওই কোয়ালিটির পোশাক তৈরি হয় রফতানি করার জন্যই। আমেরিকা আমদানিতে শুল্ক বসানোয় ভারত থেকে রফতানি কমলেও সেই ধাক্কা পুষিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ভারতের ঘরোয়া বাজারের।

ভারতীয় মাছ ও সি ফুডের রফতানির বাজারের প্রায় ৪০ শতাংশ রয়েছে আমেরিকার দখলে। আর এই বাংলা থেকে অনেক মাছ, সি ফুড ও চিংড়ি রফতানি করা হয়। আর সেই কারণেই চাপে পড়েছেন এই বাংলার ব্যবসায়ীরা। কারণ ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপলে ভারতীয় সি ফুড ও চিংড়ির রফতানি কমবে। আর তাতে ভারত তথা বাংলার ব্যবসায়ীরা এবং অর্থনীতি যে দারুণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে সেই কথা বলাই যায়।


ভারতের অন্যতম বড় চামড়ার পণ্যের উৎপাদন ক্ষেত্র কলকাতার বানতলা লেদার কমপ্লেক্স। আর সেই বানতলা থেকে চামড়ার পণ্য বিশেষত জুতো, ব্যাগ, ওয়ালেট ও বেল্ট রফতানি করা হয় আমেরিকায়। আমেরিকায় আমদানিকৃত পণ্যে ৫০ শতাংশ কর বসলে দাম বাড়বে চামড়ার জিনিসের। আর তাতে চাপে পড়বেন বানতলায় কর্মরত শ্রমিকরা। ক্ষতি হবে তাঁদের ব্যবসায়। আর এর সম্পূর্ণ প্রভাব পড়বে বাংলার অর্থনীতিতে।

অর্থনীতিবিদ সুপর্ণ পাঠক বলছেন, এই কর বসায় আমেরিকার বাজারে এই সব ভারতীয় পণ্যের দাম বাড়বে। এবার সেটা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে, আজ যেটা আমরা ১০০ টাকায় রফতানি করি, সেটা ৬৬ টাকায় রফতানি করতে হবে। আর সেটা করতে গেলে প্রভাব পড়বে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে। কারণ, এমন হলে সংস্থা থেকে কর্মচারী, সকলেরই উপার্জন কমবে। কমবে দেশের ক্রয়ক্ষমতা।



Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
September 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930