ফের শহরে রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া, বাবার পচাগলা দেহ আগলে ছিলেন কন্যা

Share

অনুপ চট্টোপাধ্যায়ঃ কলকাতাঃ ফের শহরে বদ্ধ ঘরে বাবার পচাগলা দেহ আগলে বসেছিলেন কন্যা। সাথে মা-ও ছিল। অবশেষে স্থানীয়দের তৎপরতায় গতকাল দক্ষিণ কলকাতার কবসা বোসপুকুরের ওই আবাসন থেকে দেহটি উদ্ধার করল পুলিশ। মৃতের নাম সুমিত সেন। বয়স ৬৪ বছর। দেহটিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সুমিত কবে, কী ভাবে, মারা গিয়েছেন তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ধরে ওই পরিবারের তিন সদস্যই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বোসপুকুরের ওই আবাসনের একতলায় স্ত্রী অর্চনা সেন ও কন্যা সম্প্রীতি সেনের সঙ্গে থাকতেন সুমিত। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। অবসরের পর থেকে স্থানীয়েরাই তাঁদের খেয়াল রাখতেন ও দেখাশোনা করতেন। বাড়ি থেকে তাঁরা খুব একটা বেরোতেন না। গত তিন দিন ধরে সুমিতের পরিবারের কাউকে আবাসনের বাইরে দেখতে পাওয়া যায়নি। বাড়ির দরজা বন্ধই ছিল। তাতে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। তাঁরা কসবা এলাকায় সেন পরিবারের এক আত্মীয়কে ফোন করে বিষয়টি জানান।

ওই আত্মীয় সম্প্রীতিকে ফোন করে পরিবারের খোঁজ নেন। জানা গিয়েছে, সম্প্রীতি ফোনে বার বার জানাতেন তাঁর মা-বাবা ভাল আছেন। কিন্তু মা-বাবাকে ফোন দিতে বললে তিনি ফোন দিতেন না বলে অভিযোগ। এতেই সন্দেহ বাড়তে থাকে। সোমবার ওই আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা সুমিতের আবাসনে যান। ভিতর থেকে দরজা বন্ধ ছিল। বহু বার ডাকাডাকির পরও দরজা কেউ খোলেননি বলে আভিযোগ। এর পর তাঁরা কসবা থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখে, ঘরের মধ্যে পচাগলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে ওই ব্যক্তির দেহ। তাঁকে আগলে রেখেছেন তাঁর মেয়ে ও স্ত্রী। দুর্গন্ধ বেরোতে থাকে ঘর থেকে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।


২০১৫ সালে রবিনসন স্ট্রিট-কাণ্ডে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল কলকাতায়। এক বৃদ্ধের অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধারের সময় পুলিশ জানতে পারে, ওই ঘরেই দীর্ঘ মাস ধরে রাখা আছে এক মহিলার কঙ্কাল। তাকে খাইয়ে দিতেন পার্থ দে। কঙ্কালটি ছিল তাঁর দিদির। অগ্নিদগ্ধ যে দেহ উদ্ধার হয়েছিল তা ছিল তাঁর বাবার। ২০১৭ সালে আত্মহত্যা করেছিলেন পার্থও। ২০১৫ সালের সেই ঘটনা নিয়ে ‘রবিনসন স্ট্রিট হরর স্টোরি: মিথ ভার্সেস রিয়্যালিটি’ নামে তথ্যচিত্রের সিরিজ় করেছেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। কলকাতার কসবা, গড়ফা, নেতাজি নগর, সল্টলেকেও বিভিন্ন বছরে দেখা গিয়েছে এই কাণ্ডের ছায়া। একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, বারাসত, মেমারি-সহ একাধিক জায়গায়।


DISCLAIMER: This channel does not promote any violent, Harmful or illegal activities. All content provided by this channel is meant for an educational purpose only.

Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031