নিজস্ব সংবাদদাতাঃ হাওড়াঃ গতকাল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জেরে হাওড়ার কানাইলাল ভট্টাচার্য কলেজে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
এই ঘটনায় দু’পক্ষের মধ্যে ইটবৃষ্টি, হাতাহাতি ও মারধরের ঘটনায় ছ’জন পড়ুয়া আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচ জনই ছাত্রী ছিল। আহতদের হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে ছাত্র সংসদের নির্বাচন না হওয়ায় বিভিন্ন কলেজে ছাত্র ইউনিট তৈরী করে কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিচালনা করা হচ্ছিল।
সেই নিয়ম অনুযায়ী কানাইলাল কলেজেও পরিচালন সমিতির নির্দেশে পাঁচ জন পড়ুয়া এবং কলেজের দু’জন প্রতিনিধিকে নিয়ে সাত জন সদস্যের একটি কার্যনির্বাহী কমিটি তৈরী করা হয়। যে কমিটিতে তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া অভিজিৎ সিংহকে কার্যনির্বাহী সাধারণ সম্পাদক হিসাবে মনোনীত করা হয়।
এদিকে জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফ থেকেও একটি ছাত্র ইউনিট তৈ্রী করা হয়। যেখানে প্রথম বর্ষের পড়ুয়া অর্ঘ্য ঘোষকে সভাপতি হিসাবে মনোনীত করা হয়। মূলত কলেজ কর্তৃপক্ষের তৈরী কমিটি নিয়েই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দু’টি গোষ্ঠী তৈরী হয়। এরপর নবীনবরণ উৎসবে ওঠা চাঁদার টাকার বখরা চাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর বিবাদ চরমে ওঠে।
এক গোষ্ঠীর অভিযোগ, অন্য গোষ্ঠী কলেজে বহিরাগতদের নিয়ে এসে পড়ুয়াদের উপরে হামলা চালায়, মোবাইল ভেঙে দেয় এমনকি মারধর করে হোয়াটসঅ্যাপে অস্ত্রের ছবি পোস্ট করে ভয়ও দেখানো হয়। যদিও গত কয়েক মাস থেকে প্রায়ই কলেজের মধ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটছিল।
কলেজ-মনোনীত কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ জানায়, ‘‘আমাদের কলেজে জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ থেকে যে ছাত্র ইউনিট তৈরী করে দেওয়া হয়েছে তারা কলেজের কার্যনির্বাহী কমিটিকে মান্যতা দিতে না চাওয়াতেই বিবাদের সূত্রপাত।’’
অন্য দিকে জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মনোনীত ছাত্র ইউনিট সভাপতি অর্ঘ্য বলেন, ‘‘আমাকে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য বার বার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমার সঙ্গে থাকা পড়ুয়াদেরও মারধর করা হচ্ছে। আমি পদত্যাগ করিনি বলেই এই ভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে।’’
কলেজের অধ্যক্ষ কৌস্তভ লাহিড়ী এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘এই ঘটনা কি নিয়ে হয়েছে, আমি ঠিক জানি না। এটা ওদের অভ্যন্তরীণ বিষয় হতে পারে। আর মারপিট বা গোলমাল কোনোটাই কলেজের মধ্যে হয়নি। যা হয়েছে বাইরে হয়েছে। এ নিয়ে কলেজ পরিচালনায় কোনোরকম সমস্যা হয়নি।’’
জগাছা থানার পুলিশ সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা না হলেও দু’পক্ষের থেকে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।