এক হাঁটু জল পেরিয়ে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শ্মশানে

Share

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মেদিনীপুরঃ মৃতদেহ সৎকারের জন্য নেই উপযুক্ত শ্মশান। জল থইথই মাঠের মাঝখান দিয়েই প্রায় এক কোমর কাদা জল পেরিয়ে বৃদ্ধের মৃতদেহ বহন করে সৎকারের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর দু’নম্বর ব্লকের সাহাচক গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষ্ণুপুর কালীতলা পোড়ে পাড়ার এই দৃশ্য সত্যি চোখে জল আনবে।

রবিবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বিষ্ণুপুরের বছর ছেষট্টির বৃদ্ধ নরেশ পোড়ে। বাড়িতে শোকের ছায়া। কিন্তু সেই শোককেও হার মানিয়েছে মৃৎদেহ সৎকারের চিন্তা। গ্রামের একমাত্র শ্মশানে যাওয়ার রাস্তার হাল বেহাল। কোমর সমান কাদা জল পেরিয়ে সোমবার বিকেলে সেই দেহ সৎকার করলেন গ্রামের মানুষ। গ্রামের একমাত্র শ্মশান যাওয়ার রাস্তার ভয়ঙ্কর অবস্থা। সেই বেহাল ছবি ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। কাদায় ভরা সংকীর্ণ রাস্তা দিয়ে মরদেহ বয়ে নিয়ে যাওয়া কার্যত অসম্ভব। তাই বাধ্য হয়ে জল থৈথৈ মাঠের মাঝখান দিয়েই বহুকষ্টে বৃদ্ধের মৃতদেহ বহন করে সৎকার সারলেন গ্রামের মানুষ।

গ্রামবাসীদের বক্তব্য, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে গ্রামের শ্মশানে যাওয়ার রাস্তাটি ঢালাইয়ের দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। শ্মশানে একটি বৈদ্যুতিন চুল্লি তৈরির জন্য পঞ্চায়েত ও বিডিওর কাছে দাবিও জানান। তবে সেই দাবিতে প্রশাসন আমল দেয়নি বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, সরকার দুর্গাপুজোয় অনুদান ৮৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লক্ষ ১০ হাজার করতে পারে। আর গ্রামের উন্নয়নের জন্য বললেই পয়সা নেই বলে জানিয়ে দেয়। বর্ষার সময় গ্রামে কেউ মারা গেলে সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে জানিয়ে তাঁদের কাতর আবেদন, “জীবিত অবস্থায় তো ভাল রাস্তায় যাতায়াত করতে পারি না। অন্তত মৃত্যুর পর শ্মশানে যাওয়ার রাস্তাটা ঠিক করে দিক প্রশাসন।”


এই নিয়ে তৃণমূল নেতা তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ আশিস হুদাইত বলেন, “দাসপুর ২ ব্লক মেদিনীপুর সদরের চেয়ে ৭০ ফুট তলায় রয়েছে। বেসিনের মতো। বর্ষার সময় সব জল দাসপুর ২ ব্লকে আসে। প্রতি বছর রাস্তাঘাট ডুবে যায়। রূপনারায়ণের জল যতক্ষণ না বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পৌঁছয়, ততক্ষণ পর্যন্ত জমা জল নামে না। ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান সেজন্যই গুরুত্বপূর্ণ। রূপনারায়ণে ড্রেজিংয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। সামনের বছর হয়তো এই সমস্যা হবে না।”


Share this article

Facebook
Twitter X
WhatsApp
Telegram
 
November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930