মিনাক্ষী দাসঃ উত্তর চব্বিশ পরগণাঃ গত দু’-তিন দিন থেকে প্রতিবেশীরা পরিবারের কোনো সদস্যদের দেখা পাননি। এরপরই আচমকা বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বের হতে দেখে স্থানীয়রাই পুলিশের কাছে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে বাড়ির দরজা ভেঙে স্বামী-স্ত্রী ও পুত্রের দেহ উদ্ধার করার পাশাপাশি একটি সুইসাইড নোটও পাওয়া যায়। উত্তর চব্বিশ পরগণার সোদপুর স্টেশন সংলগ্ন বসাক বাগান এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে এলাকাবাসীরা এলাকার একটি বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ পান। তারপর খড়দহ থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়ির দরজা ভাঙতে স্বামীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। আর পাশে স্ত্রী ও ছেলের নিথর দেহ দেখতে পায়। মৃতরা হলেন- স্বামী সমীর কুমার গুহ যিনি পেশায় একজন পোশাক ব্যবসায়ী ছিলেন। স্ত্রী ঝুমা গুহ এবং ছেলে বাবাই গুহ (২২)।
প্রসঙ্গত, গত বছর লকডাউনের সময় থেকেই সমীরবাবুর ব্যবসায় মন্দা শুরু হতেই তিনি মানসিক ভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সংসার ও ব্যবসা চালাতে বাজারে প্রচুর ঋণ হয়ে যায়। ইদানিং বাড়ির বাইরেও খুব একটা বের হতেন না।
পুলিশ সূত্রে জানা যায় যে, মৃতদেহগুলোর পাশ থেকে যে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে তাতে সমীরবাবুর এক বন্ধুকে উদ্দেশ্য করে লেখা রয়েছে যে, “প্রিয় পার্থ ঘোষ তোকে দায়িত্ব গিয়ে গেলাম ঘরের যে আসবাব পত্র রয়েছে তা বিক্রি করে বকেয়া টাকাগুলো মিটিয়ে দিস”। এছাড়াও চিঠিতে কয়েকজন টাকা প্রাপকের নামও লেখা রয়েছে।
এর থেকেই পুলিশের প্রাথমিক ভাবে অনুমান, সমীরবাবু ঋণগ্রস্তের জেরে পুরো পরিবার সমেত আত্মঘাতী হন। পুলিশ মৃতদেহগুলি সাগর দত্ত হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। যদিও পুলিশ পুরো ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে। এছাড়া মৃতের আত্মীয় সহ এলাকার প্রতিবেশী ও বন্ধু-বান্ধবদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
একদিকে করোনা মহামারী অপরদিকে আর্থিক অনটন সাধারণ মানুষের জীবনকে ছারখার করে তুলছে।