মিনাক্ষী দাসঃ উত্তর চব্বিশ পরগণাঃ মূলত খসড়া তালিকায় নাম বাদ পড়ার ঘটনা ঘিরে বিক্ষোভ। অভিযোগ, মতুয়াদের নাম বাদ নিয়ে শান্তনু ঠাকুর কী ভাবছেন, সেই উত্তরের খোঁজে বুধবার তাঁর বাড়ি ঘেরাও করেন মমতাবালা ঠাকুরের অনুগামীরা। এর পরেই শুরু হয় দ্বৈরথ। মতুয়াদের ঠাকুরবাড়ির কাজিয়া গড়ায় হাতাহাতি, মারামারিতে। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ শান্তনুর লোকজন বিক্ষোভকারী মতুয়াদের গায়ে হাত তোলেন। পাল্টা শান্তনু অনুগামীদের দাবি, মমতাবালার লোকজন এসে ‘গুন্ডাগিরি’ করছিল। মতুয়ারা তার প্রতিবাদ করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে জানানোর পাশাপাশি আইনের পথে হাঁটার কথাও জানিয়েছেন শান্তনু।

গত সোমবার বনগাঁর গাঁড়াপোতায় একটি সভা করেন শান্তনু ঠাকুর। নির্বাচন কমিশনের খসড়া তালিকায় এ রাজ্যের ৫৮ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। শান্তনু সেই সভায় বলেছিলেন, ‘আজকে ৫০ লক্ষ রোহিঙ্গা, মুসলমান, বাংলাদেশি, পাকিস্তানি মুসলমানের নাম যদি বাদ যায়, সেখানে আমাদের ১ লক্ষ লোকের নাম যদি বাদ যায়, তাহলে তা সহ্য করে নেওয়া উচিত। মতুয়ারা সকলেই নাগরিকত্ব পাবেন, ভোটাধিকারও পাবেন।’ শান্তনুর দাবি, এর জন্য তিনি কেন জবাব দেবেন? যা বলার নির্বাচন কমিশন বলবে। তবে দু’পক্ষের ঝামেলার মাঝে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয় ঠাকুরবাড়ির সামনে।

শান্তনু ঠাকুরের এ হেন মন্তব্যে মতুয়াগড় ঠাকুরনগর-সহ একাধিক মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় চাপানউতোর শুরু হয়। তৃণমূলের সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর বলেন, ‘মতুয়ারা সবাই যদি নাগরিকত্ব পাবেন, তা হলে SIR করে নাম বাদ দেওয়া হলো কেন? কেনই বা তাদের কাছে নথি চাওয়া হচ্ছে? শান্তনু তো টাকা নিয়েও মতুয়াদের নাগরিকত্ব দিতে পারেননি। এর উত্তর দিন শান্তনু।’ এর মাঝেই বুধবার তুলকালাম বাধে। অভিযোগ, এ দিন মমতাবালার অনুগামীরা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের ব্যানার নিয়ে পথে নামেন। শান্তনুর বাড়ির কাছে যেতেই অশান্তি শুরু হয়। শ্যামনগরের নান্টু হালদার ওরফে নান্টু গোঁসাইকে ঘিরে ধরে মারধরের অভিযোগ ওঠে।
Sponsored Ads
Display Your Ads Here
নান্টু গোঁসাই বলেন, ’শান্তনুর বাহিনী আমাকে মেরেছে। বুকে, পিঠে মেরেছে।’ মমতাবালা ঠাকুর বলেন, ‘আমরা সংবাদমাধ্যমে দেখেছি উনি কী বলেছেন। মতুয়াদের ১ লক্ষ নাম কেটে গেলে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। এটাই মতুয়ারা জানতে গিয়েছিলেন, এত দিন ধরে CAA টাকা নিয়ে অ্যাপ্লাই করতে বলেছেন, নাগরিকত্ব, ভোটাধিকার নিয়ে ভাবতে না করেছেন, হিন্দু কার্ডের কথা বলেছেন। এখন তা হলে এই কথা কেন বলছেন? কেউ মারামারি করতে যায়নি। অথচ বনগাঁর বিজেপি নেতা লোক এনে যে ভাবে মতুয়াদের গায়ে হাত দিয়েছে, তা সকলে দেখেছেন।’

পাল্টা শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘মমতাবালার একদল লোক প্ল্যাকার্ড, অস্ত্র নিয়ে এখানে এসে অকথ্য ভাষায় কথা বলছিলেন। গালিগালাজ করছিলেন বলে এখানে থাকা আমাদের মতুয়াভক্তরা প্রতিবাদ করেছেন। তাতেই এত বিশৃঙ্খলা। মমতাবালাকে এই গুন্ডারাজ চালানোর সাহস দিল কে? আমরা আইনের পথে হাঁটব। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে জানিয়েছি। একজন সাংসদের বাড়ির সামনে এসে এই গুন্ডামি হয়েছে।’
Sponsored Ads
Display Your Ads Here









